ব্রাহ্মণপাড়ায় ট্রেনের নিচে বিস্ফোরণ, অল্পের জন্য রক্ষা শতাধিক যাত্রী

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৩৫ অপরাহ্ন, ১১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২:৩৫ অপরাহ্ন, ১১ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চোরাকারবারিদের ফেলে দেওয়া ভারতীয় আতশবাজির বস্তা ট্রেনের নিচে পড়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ট্রেনের ভেতরে, তবে অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান শতাধিক যাত্রী।

সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বুড়িচং উপজেলার পীতাম্বর এলাকার রেয়াছত আলী ফকির মাজার সংলগ্ন রেললাইনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।

আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে বাসে আগুন, ঘুমন্ত চালকের মৃত্যু

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সালদানদী ও শশীদাল রেলস্টেশন হয়ে চট্টলা এক্সপ্রেস ও নাসিরাবাদ ট্রেনে ভারতীয় অবৈধ পণ্য পাচার করে একটি চোরাকারবারি চক্র। ওইদিন সদর রসুলপুর রেলস্টেশনে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চালানোর খবর পেয়ে চট্টগ্রামগামী চট্টলা এক্সপ্রেস থেকে আতঙ্কে চোরাকারবারিরা বস্তাবন্দি পণ্য নিচে ফেলে দেয়। সেই সময় পাশ দিয়ে যাচ্ছিল মহানগর গোধূলী এক্সপ্রেস, যার চাকায় একটি আতশবাজিভর্তি বস্তা পিষ্ট হয়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরণের শব্দে ট্রেনে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। তবে ট্রেনটি চলন্ত অবস্থায় থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েনি, ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়।

আরও পড়ুন: চিকন্দী আইনজীবী সমিতি ভবন ও চেম্বার বোমা হামলা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের পর স্থানীয়রা ট্রেনলাইন থেকে ছিটকে পড়া ভারতীয় পণ্য সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট দ্রুত ওইসব পণ্য সরিয়ে ফেলে।

স্কুলশিক্ষার্থী মাহফুজ, সিয়াম ও অমিত বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযানের খবর পেয়ে চোরাকারবারিরা ট্রেন থামার আগেই বস্তাগুলো ফেলে দেয়। আতশবাজি ট্রেনের নিচে পড়ে বিস্ফোরণ হয়, ট্রেনে থাকা সবাই আতঙ্কে কেঁপে ওঠে।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন সন্ধ্যা নাগাদ ট্রেন আসার আগে এসব চোরাই পণ্য স্টেশনের বাথরুম ও অফিসকক্ষে এনে রাখা হয়। পরে সুযোগ বুঝে ট্রেনে তোলা হয়। এসব বস্তার আড়ালে মাদকদ্রব্য, ইয়াবা, গাঁজা, ক্রিস্টাল মেথসহ (আইস) নানা অবৈধ পণ্য পাচার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

একজন নিয়মিত যাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই কাজের সঙ্গে কিছু ট্রেন কর্মকর্তা ও স্টেশন মাস্টারও জড়িত থাকতে পারেন।

স্থানীয়দের মতে, শশীদলের রেজাউল করিম নামে এক ব্যক্তি ৩০ বছর ধরে রেলপথ ব্যবহার করে ভারতীয় অবৈধ পণ্য, মাদক ও আতশবাজি পাচারে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও বিজিবির কিছু অসাধু সদস্যকে ‘ম্যানেজ’ করে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মাঝে প্রশাসনের অভিযান হলেও কিছুদিনের মধ্যেই কার্যক্রম আবার শুরু হয়।

এ বিষয়ে সদর রসুলপুর স্টেশন মাস্টার প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট সানোয়ার জাহানের নেতৃত্বে চট্টলা এক্সপ্রেসে অভিযান চলাকালীন এ বিস্ফোরণ ঘটে। সৌভাগ্যবশত বড় কোনো ক্ষতি হয়নি।