পটুয়াখালীতে কলেজছাত্র সিয়াম হত্যার ১২ ঘণ্টার মধ্যে দুই প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করল র্যাব
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে কলেজছাত্র সাইমন ইসলাম সিয়াম (১৭) হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে মামলার দুই প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৮ ও র্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানিক দল।
র্যাব সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ থানাধীন সুবিদখালী সরকারি কলেজ সংলগ্ন বালুর মাঠে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় ঢাকা রমিজউদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইমন ইসলাম সিয়ামকে।
আরও পড়ুন: বিজিবির ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, সিয়াম গত ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার বাসা থেকে পটুয়াখালীর মাদারবুনিয়ায় তার নানাবাড়িতে বেড়াতে আসে। ঘটনার দিন দুপুর আনুমানিক ৩টা ১৫ মিনিটে সিয়াম ও তার খালাত ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন সুবিদখালী সরকারি কলেজের উত্তর পাশের বালুর মাঠে ঘুরতে গেলে সেখানে ওৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী তাদের গতিরোধ করে। পরিচয় জানতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে অভিযুক্তরা লাঠি দিয়ে সিয়ামের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্মমভাবে আঘাত করে।
মারধরে গুরুতর আহত হলে অভিযুক্তরা নিজেদের মোটরসাইকেলে করে সিয়ামকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় সিয়ামকে রক্ষা করতে গিয়ে তার খালাত ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুনকেও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। তিনি বর্তমানে শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মির্জাগঞ্জ থানায় একই রাতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: সিলেট বিমান বন্দরে ভিড় না করার নির্দেশনা, জনদুর্ভোগের আশঙ্কায় অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ বিএনপির
হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পরপরই র্যাব-৮, বরিশাল ছায়া তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্তরা এলাকা ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যায় এবং অবস্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। তবে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে র্যাব-৮ ও র্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানিক দল আসামিদের পালানোর রুট ও সম্ভাব্য কৌশল বিশ্লেষণ করে তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এর ধারাবাহিকতায়, ঘটনার মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর ধোলাইপাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার ১ নম্বর অভিযুক্ত মো. রাইয়ান (পিতা: আব্দুস সালাম, সাং: উত্তর সুবিদখালী) এবং ২ নম্বর অভিযুক্ত মো. রাশেদ (পিতা: মো. রফিকুল ইসলাম পিন্টু, সাং: ডিবুয়াপুর), উভয় থানা—মির্জাগঞ্জ, জেলা—পটুয়াখালীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলার অন্যান্য পলাতক অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বরিশাল র্যাব-৮ এর কমান্ডিং অফিসার (জি), এনপিপি, বিএন, কমান্ডার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেইন বলেন, সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা ও সন্ত্রাস দমনে র্যাব সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি জানান, এ ধরনের নৃশংস অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকেই আইনের বাইরে থাকতে দেওয়া হবে না।
ব্রিফিংকালে পটুয়াখালী র্যাব-৮ কোম্পানি কমান্ডার ও পটুয়াখালী (সিপিসি-১) এর স্কোয়াড্রন লিডার রাশেদসহ র্যাবের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।





