রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক রাতে দুই অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল হাসপাতাল ও বসতঘর

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একই রাতে পৃথক দুটি স্থানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে সংঘটিত এই দুই ঘটনায় একটি হাসপাতাল সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে এবং কয়েকটি বসতঘর ছাই হয়ে গেছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মধুরছড়া এলাকার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি ব্লকে অবস্থিত একটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ক্যাম্পবাসীদের সহায়তায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আরও পড়ুন: লঞ্চ–বাল্কহেড সংঘর্ষ, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন সহস্রাধিক যাত্রী

এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে হাসপাতাল ভবনটি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আগুনে পুড়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধপত্র।

২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ‘ওবাট হেলথ পোস্ট’ নামে এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেছিল দাতব্য সংস্থা ওবাট হেলপারস ইউএসএ। বর্তমানে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউএসএর সহায়তায় ওবাট হেলপারস বাংলাদেশ ক্যাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কেন্দ্রটি পরিচালনা করছিল।

আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে দুই লঞ্চের সংঘর্ষে নিহত ৮, আহত অনেকে

ওবাটের হেলথ কো-অর্ডিনেটর ডা. মাহামুদুল হাসান সিদ্দিকী রাশেদ জানান, আকস্মিক এই অগ্নিকাণ্ডে পুরো হাসপাতালটি ধ্বংস হয়ে গেছে। আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আশপাশের রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাসিন্দারা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেতেন।

রোহিঙ্গাদের কাছে ‘মালয়েশিয়া হাসপাতাল’ নামে পরিচিত এই কেন্দ্রটি পুড়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক আশ্রিত মানুষ। ডি ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক বলেন, এই হাসপাতালটি আমাদের জন্য বড় ভরসার জায়গা ছিল। আগুনে পুড়ে যেতে দেখে খুব কষ্ট লাগছে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডলার ত্রিপুরা জানান, একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করেছে এবং কোনো আহতের খবর নেই। আগুনের কারণ তদন্ত শেষে জানা যাবে।

এর আগে, একই রাতে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি ব্লকে আরেকটি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে অন্তত পাঁচটি বসতঘর পুড়ে যায়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং ১ ডব্লিউ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সহস্রাধিক ঘর পুড়ে যায় এবং একজনের মৃত্যু হয়। শীত মৌসুমে ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পজুড়ে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বাড়ছে।