মেহেরপুরে শরিফা চাষে বাজিমাত

Sadek Ali
মর্তুজা ফারুক রুপক, মেহেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১২:৫১ অপরাহ্ন, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৩:৫২ পূর্বাহ্ন, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামে বিলুপ্ত প্রায় শরিফা (মেওয়া আতা) চাষ করে বাজিমাত করেছে বাহাউদ্দীন নামের এক চাষি। প্রথমে বাড়ির আঙিনায় শখের বসে শরিফার গাছ লাগিয়ে ভালো ফলন পান বাহাউদ্দীন। পরে বানিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করে ব্যাপক লাভবান হন। বর্তমানে বাহাউদ্দীন ৮ বিঘা জমিতে শরিফা চাষ করছেন।

কাঁচা অবস্থায় সবুজ আর পাকলে হলদেটে রঙ ধারণ করা শরীফা স্বাদে অতুলনীয়। এক সময় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এই ফলের গাছ দেখা যেত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে এই ফল। সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পাঁচ বছর আগে বাহাউদ্দীন মাত্র দুই বিঘা জমিতে শরীফা চাষ শুরু করেন।

আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে হলুদে সুদিনের স্বপ্ন দেখছে কৃষক

প্রথম বছরে তার খরচ হয় মাত্র ২০ হাজার টাকা। এর বিপরীতে শরীফা বিক্রি করে আয় করেন প্রায় ৪০ হাজার টাকা।

লাভজনক দেখে তিনি আরও ৬ বিঘা জমিতে শরীফার বাগান সম্প্রসারণ করেন। বর্তমানে তার মোট আট বিঘা জমির বাগানে থোকায় থোকায় শোভা পাচ্ছে শরীফা। এ বছর প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে তিনি পেয়েছেন প্রায় ৪ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন: থানার আঙিনায় সবুজের ছোঁয়া গাছে গাছে ঝুলছে পেপে

বাহাউদ্দীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমিস্ট্রি নিয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। তারপর কিছুসময় বেসরকারি ব্যাংকে চাকরিও করেন। কিন্তু সব ছেড়ে ফিরে এলেন নিজের গ্রাম গাংনী উপজেলার চেংগাড়ায়। হয়ে উঠলেন কৃষি উদ্যোক্তা। শুধু শরিফা না, মাছ, বিভিন্ন জাতের ফল সবজীও চাষ করেন তিনি।

বাহাউদ্দীন বলেন, শরীফা এখন আর আগের মতো সহজে পাওয়া যায় না। তাই এই ফল ধরে রাখার জন্য এবং চাষে লাভজনক হওয়ায় আমি শরীফার বাণিজ্যিক বাগান করেছি। স্বল্প খরচ আর অল্প পরিশ্রমেই বেশি লাভ হওয়ায় অনেকে এখন আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

মূলত অনলাইন মাধ্যমেই এখন তাঁর শরিফা বিক্রি হয়। ঢাকাসহ দেশের বড় শহর থেকে অনলাইনে অর্ডার আসে প্রচুর। গাছের খুব বেশি যত্ন নেয়া  লাগে না বলে প্রায় পুরোটাই লাভজনক।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, শরীফা একটি পুষ্টিকর ও রোগবালাইমুক্ত ফল। চাষে খরচ কম অথচ লাভ অনেক বেশি। তিনি বলেন, আমরা চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিচ্ছি। যদি শরীফা চাষ বাড়ানো যায়, তবে মানুষের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে বড় অবদান রাখবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সামছুল আলম জানান, বাহাউদ্দীনের দেখাদেখি অনেকেই মেওয়া চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। মেওয়া চাষ অর্থনৈতিকভাবে একটি লাভজনক পুষ্টিকর ফল। এই ফলটি দেখতে কিছুটা আতা ফলের মত।