কঠোর নিরাপত্তার সিভিল এভিয়েশন দায় এড়াতে পারে না

বিমানবন্দরের স্ট্রং রুমে আমদানিকৃত বিপুল অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গুলি চুরির ঘটনা রহস্যাবৃত

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৬ পূর্বাহ্ন, ১১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১:৫৫ অপরাহ্ন, ১১ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো স্ট্রং রুমে ভল্ট ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে, এতে মুঠো হদিস মিলেছে কম সংখ্যক আগ্নেয়াস্ত্র; কিন্তু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি অনুযায়ী বহুসংখ্যক মূল্যবান অস্ত্র ও গোলাবারুদ অদৃশ্য রয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিমানবন্দর থানায় তিনটি জিডি করা হয় এবং কার্যত তদন্ত চলছে।

প্রতিষ্ঠান এমএস গানমাক্সের মালিক ফয়সাল কবির জানান, গত ১৮ অক্টোবর বিমানবন্দরের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সময় তাদের কয়েকটি কনসাইনমেন্ট কার্গো হাউসের স্ট্রং ভল্টে ছিল। অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে না গেলেও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা ও থলথলে থাকা সিসি ক্যামেরার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চোরচক্র ভল্ট ভেঙে লুটপাট চালিয়েছে। প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরোহী উদ্বেগে তাদের ৩৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় এক লাখ রাউন্ড গুলি অনুপস্থিত বলে দাবি করা হয়েছে। এ মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ভারত ও জার্মানি উৎপত্তির পিস্তল, এয়ার রাইফেল ও বিপুল সংখ্যক গুলি।

আরও পড়ুন: ফ্যাসিবাদী গুম, খুন ও লুটপাট নিয়ে ঢাকার ১০ পয়েন্টে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী

বিমান মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনভুক্ত তথ্যে সাতটি আগ্নেয়াস্ত্র হারানোর প্রমাণ পেয়েছে এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় চরম অবহেলার ইঙ্গিত দেখিয়েছে। তদন্তে কিছু নিরাপত্তা শিফারিশও এসেছে—কার্গো হাউসে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন, নিরাপত্তাবৃদ্ধি এবং কাস্টমস আইন অনুযায়ী দীর্ঘ সময় মালামাল রেখে না দেওয়া ইত্যাদি।

বিমানবন্দর থানার একজন কর্মকর্তা জানান, অস্ত্র ও গোলাবারু অনুপস্থিতির বিষয়ে জিডি নেয়া হয়েছে এবং ঘটনার সম্পূর্ণ চিত্র নির্ধারণে তদন্ত চলছে। পুলিশের জব্দ তালিকায় ধরা পড়া সামগ্রীর মধ্যে ভাঙা ভল্ট থেকে জব্দ করা হয়েছে ৬৭টি পিস্তল, ১২টি শটগান, ১টি অ্যাসল্ট রাইফেল, বহু খালি ম্যাগাজিন ও রাউন্ড ইত্যাদি; তবু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পণ্য এখনও অনুপস্থিত।

আরও পড়ুন: আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি ব্রিফিং ডেকেছে ডিএমপি

ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার কামরুল হাসান জানান, মালামালের হেফাজতকারী কর্তৃপক্ষ বিমান বাংলাদেশ; কাস্টমস শুধুই শুল্ক আদায়ের দায়িত্ব পালন করে। মালিকপক্ষের যে পণ্য আছে সেগুলো কাগজপত্র যাচাই করে ছাড়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২৮ অক্টোবর সকালে চুরির ঘটনা প্রথম জানাজানি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলেছিল। পরের দিন ভাঙা স্ট্রং রুমের সামনে সাক্ষীর উপস্থিতিতে তালিকা প্রস্তুত করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রের ক্ষতিকর অন্তর্ভুক্তি ও সহযোগিতার দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছে।