দাম না বাড়ায় আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক
দাম না বাড়ায় আলু নিয়ে বিপাকে কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিক। কইলে কইমেন মিছা কথা আলুর দাম নিয়ে কি দশা, ছাঁওয়া ছোট আসি কয় আলু বুঝি খাবার নয় কি কমো বাহে এলা তোমাক দুঃখের কথা। আলুর দাম নেই তবুও রং কমেনি রংপুরের ব্যবসায়ীদের। ভাওয়াইয়া গানের সুরে সুরে লোকসানের কথা বলছেন ব্যবসায়ী আরিফ। মৌসুমের শুরুতে হিমাগারে আলু রেখে এখন বড় লোকসানের মুখে আরিফসহ রংপুরের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
হিমাগারে আলুর জাতভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকায়। অথচ উৎপাদন থেকে শুরু করে সংরক্ষণ পর্যন্ত খরচ পড়েছে কেজিতে প্রায় ২১ থেকে ২২ টাকা। ফলে কেজিপ্রতি প্রায় ১০-১২ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। বস্তাপ্রতি (৬০ কেজি) লোকসান দাঁড়াচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: রামগতিতে গনিত অলম্পিয়াড ২০২৫ অনুষ্ঠিত
প্রান্তিকের চাষিরা খুচরা বাজারে কিছু আলু বিক্রি করলেও বাজারে চাহিদা না থাকায় দাম আরও কমে গেছে। অন্যদিকে, আলু না ওঠায় হিমাগারের ভেতরে কর্মচাঞ্চল্যও কমে গেছে। ফলে কৃষকদের উপর নির্ভরশীল হিমাগার কর্মচারীরাও পড়েছেন বিপাকে।
বাহারুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আলু বিক্রিতে অনিহা ধরেছে, আলু কোল্ড স্টোরেজের ভাড়া দিয়ে তুলে যে লস দেখছি তাতে মনে হয় সেখানে হাত না দেয়াই ভালো।
আরও পড়ুন: মনোনয়ন না পেয়ে ধানক্ষেতে ‘রিভিউ’ চেয়ে ভাইরাল বিএনপি নেতা আলাল
কৃষক স্বপন, ফেরদৌস সহ কয়েকজন সূত্রে জানা যায়, আলু কেজিতে চাষাবাদে খরচ ১৭ টাকা, কোল্ড স্টোরেজ খরচ ৬.৭২ বের করাসহ ৭ টাকা, বস্তায় খরচ ১.৫০ টাকা, যাতায়াত খরচ ১টাকা+ ১ টাকা= ২ টাকা অর্থাৎ কেজিতে মোট খরচ প্রায় ২৭ টাকা। আলু বের করে ১০-১২ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন আপনারাই বলেন আলু কি করবো? বের করবো না পচাঁবো।
অভিযোগের সুরে তারা আরো বলেন, সরকার যদি নেক নজর দিতো তাহলে আমরা বিপদ থেকে উদ্ধার হতাম। সরকার মাঝখানে আলুর রেট বেধে দিলেও পরে কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে দামের তুলনায় হিমাগারের ভাড়া বেশি হওয়ায় অনেকেই এখনো আলুর বের না করায় বিপাকে কোল্ড স্টোরেজ কর্তৃপক্ষও। রংপুর বিষাণ হিমাগারের ম্যানেজার মাইদুল ইসলাম বলেন, হিমাগারের খরচও উঠছে না এর ফলে বড় ক্ষতির মুখে এই ব্যবসা।
একই অবস্থা দেখা গেছে রংপুর হিমাগার দুইয়ে। যেখানেও বস্তা এবং খোলা আলু পড়ে আছে মেঝেতে। ভালো রাখতে পরিচর্যা করছেন হিমাগারের কর্মচারীরা। ধান, চালের মতো আলুর দামও সরকারিভাবে নির্ধারণসহ কৃষক, ব্যবসায়ী এবং হিমাগার মালিকদের বাঁচাতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহজালাল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে আলু ক্রয় সংক্রান্ত কোন নোটিশ আসে নি। আসলে জানানো হবে।





