গাজা শিশুদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে ‘বিপজ্জনক’ জায়গা: ইউনিসেফ

বাংলাবাজার পত্রিকা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, ২৩ নভেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ৮:০৫ পূর্বাহ্ন, ২৩ নভেম্বর ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ছয় সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। টানা দেড় মাস ধরে চালানো ইসরায়েলের আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এই হামলায় নিহতদের মধ্যে ৬ হাজারেরও বেশি শিশু।

এই পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকাকে শিশুদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ। এমনকি গাজায় শিশুদের ওপর সংঘটিত সহিংসতার প্রভাব বিপর্যয়কর বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন: ভারতের বিপক্ষে রায় আন্তর্জাতিক আদালতের, স্বাগত জানাল পাকিস্তান

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘শিশু হওয়ার জন্য গাজা উপত্যকা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা’ বলে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের প্রধান বুধবার জানিয়েছেন।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ৫ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে ৬৯ জন নিহত, মোট প্রাণহানি ৬০ হাজার ছাড়াল

তিনি বলেন, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সর্বশেষ এই যুদ্ধের প্রকৃত মূল্য পরিমাপ করা হবে সহিংসতায় যারা নিহত হয়েছে এবং যুদ্ধের জেরে যাদের জীবন চিরতরে পরিবর্তিত হয়েছে তাদের সংখ্যা দিয়ে। চলমান এই যুদ্ধের সমাপ্তি এবং সম্পূর্ণ মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার ছাড়া এই সংখ্যা কেবলই দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকবে।

ক্যাথরিন রাসেল গত সপ্তাহে গাজা পরিদর্শন করেন। গত ৭ অক্টোবর থেকেই ইসরায়েল গাজায় আকাশ থেকে বোমাবর্ষণ করছে, অবরোধ আরোপ করে রেখেছে এবং সৈন্য ও ট্যাংক নিয়ে স্থলপথেও আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।

রাসেল বলেন, ‘শিশু হওয়ার জন্য গাজা উপত্যকা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক জায়গা। গাজায় শিশুদের ওপর সংঘটিত সহিংসতার প্রভাব বিপর্যয়কর, নির্বিচার এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ।’

ইসরায়েল বুধবার হামাসের সাথে চার দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী চার দিনের মধ্যে ৫০ জন বন্দি মুক্তি পাবে এবং এ সময়টিতে লড়াই স্থগিত থাকবে।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এরপর অতিরিক্ত প্রতি দশজন বন্দির মুক্তির জন্য এক দিন করে যুদ্ধবিরতি বাড়বে।’

বিনিময়ে চারদিনের মধ্যে ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি দেবে ইসরায়েল। 

অন্যদিকে জাতিসংঘের নারী নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহাউস ১৫ সদস্যের এই নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, ‘গাজার নারীরা আমাদের বলেছেন, তারা শান্তির জন্য প্রার্থনা করছেন। কিন্তু যদি শান্তি না আসে, তাহলে তারা তাদের ঘুমের মধ্যে, তাদের সন্তানদের কোলে নিয়ে দ্রুত মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমাদের সকলের জন্য লজ্জা যে, মায়েরা এখন বিশ্বের কোনও এক জায়গায় এমন প্রার্থনা করছেন।’

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।