ভারতে গ্রেফতার জেএমবি নেতা রহমতউল্লাকে নিয়ে তোলপাড়

অনুপ্রবেশকালে ভারতীয় সীমান্তে গ্রেফতার জঙ্গি নেতা রহমতুল্লাকে নিয়ে তোলপাড় চলছে। চলতি বছর মে মাসে পশ্চিবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় সাধারণ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে সীমান্ত জেলা বনগাঁও সংশোধনাগারে পাঠানো হলে তার আসল পরিচয় বেরিয়ে আসে। এ ঘটনায় ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে রহমতুল্লাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জানা যায়, রহমতউল্লার গ্রেফতার ঘিরে ভারতে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে। তাকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষ করে ১৮ অক্টোবর কলকাতার শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা আনন্দবাজারে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, রহমতুল্লা একজন সাধারণ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে পশ্চিবঙ্গে ধরা পড়েন। পরে তাকে বনগাঁ সংশোধনাগারে পাঠানো হলে তার জঙ্গী পরিচয় বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে ঘটনা জেল কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছানোর পর ভারতীয় গোয়েন্দারা রীতিমত নড়েচড়ে বসেন। এরপরই রমতুল্লাকে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি করা হয়।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুই বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মামলা, হতে পারে ৩০ বছরের কারাদণ্ড
সূত্র বলছে, জেরার মুখে ভারতে অনুপ্রবেশ ও জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন রহমতুল্লা। বিশেষ করে তার সঙ্গে কাশ্মীরে অবস্থানরত পাক জঙ্গি গোষ্ঠি লস্কর-ই-তৈয়েবা এবং জইশ-ই-মহম্মদের নেতাদের যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া অনুপ্রবেশ এবং ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে জঙ্গীদের পরিকল্পনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। এসব তথ্য আরও গভীরে গিয়ে যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতে ঢোকার পর রহমতুল্লা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছিলেন। তিনি ভারতীয় নাগরিকদের ব্যবহৃত আধারকার্ড ও প্যানকার্ডসহ স্থানীয় পরিচয়পত্র তৈরির চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু মাঝ পথে ধরা পড়ায় তার সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এর আগে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে তিনি বাংলাদেশেও একাধিকবার গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে একাধিক জঙ্গি সম্পৃক্ততার মামলা আদালতে বিচারাধীন। তার পিতার নাম আব্দুর রব এবং মায়ের নাম মমতাজ। ঢাকার অদূরে ধামরাই এলাকার বরনালী গ্রামের বাসিন্দা রহমতুল্লা দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন চুক্তি নিয়ে পুতিনের অবস্থান স্পষ্ট করলেন ট্রাম্প, জেলেনস্কির উপস্থিতি নিয়ে নতুন তথ্য
সূত্র জানায়, রহমতউল্লাকে গ্রেফতারের পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করে। ইতোমধ্যে উভয় দেশের একাধিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রহমতুল্লার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করা হয়েছে। রহমতুল্লাকে দেশে ফিরিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) এবং র্যাবের গোয়েন্দা শাখায় যৌথভাবে কাজ করছে। প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে শিগগিরই তাকে দেশে ফেরানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।