যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া স্বীকৃতি দিলো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আগে জানিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হয় এবং টেকসই শান্তিচুক্তি ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে অঙ্গীকার না করে, তবে যুক্তরাজ্য তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার এই পদক্ষেপে ইতিমধ্যেই ইউরোপের পর্তুগাল ও ফ্রান্সও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর আগে গত বছর স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল। জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্য দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৯১ ফিলিস্তিনি
এদিকে, যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপকে তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েলি সরকার, জিম্মিদের পরিবার এবং কিছু কনজারভেটিভ নেতা। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “এটি সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করার সমান।”
তবে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। সরকারি সূত্র জানায়, গত কয়েক সপ্তাহে গাজার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গাজায় অনাহার ও সহিংসতার চিত্র “সহ্য করা যাচ্ছে না।”
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৮ নির্দেশনা
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা ইসরায়েলের সর্বশেষ স্থল অভিযানকে ‘মহাপ্রলয়সদৃশ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। দখলদার বাহিনীর অভিযানে লাখ লাখ মানুষ গাজা সিটি থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের একটি তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে। তবে ইসরায়েল এই প্রতিবেদনকে ‘বিকৃত ও মিথ্যা’ হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ব্রিটিশ মন্ত্রীরা আরও বলেন, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং এটাই যুক্তরাজ্যের সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস চলতি মাসের শুরুতে স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতিকে স্বাগত জানান। দুই নেতা একমত হন, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন শাসন ব্যবস্থায় হামাসের কোনো ভূমিকা থাকবে না।
স্টারমার আগেই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে সময়সীমা হিসেবে ঠিক করেছিলেন। তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে তখনই, যখন তা শান্তি প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান রাখবে। এখন সেই সমাধান হুমকির মুখে; তাই পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে।”