গাজা সিটিতে থেকে যাওয়া সবাইকে ‘সন্ত্রাসী’ বলল ইসরায়েল: নিহত আরও ৫৩

গাজা উপত্যকার তীব্র ইসরায়েলি হামলায় একদিনে অন্তত ৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে আল জাজিরা। বুধবার ভোর থেকেই বোমাবর্ষণ ও স্থল হামলা বৃদ্ধি পাওয়ায় গাজা সিটি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, আবাসিক ভবন, স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্র ঝরনা-ঝরনা ভেঙে পড়ছে এবং হাজারো নারী ও শিশুসহ নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে পালাচ্ছেন। (সূত্র: আল জাজিরা)
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজা সিটিতে থাকা লোকদের শহর ত্যাগের শেষ সুযোগ হিসেবে নোটিশ দিয়েছে এবং অ্যালার্ট করেছে— যারা সিটি ছেড়ে যাবেন না তাদেরকে ‘সন্ত্রাসী বা সন্ত্রাসীদের সমর্থক’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এই বক্তব্যই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্যাটজ সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকরা এ ধরণের ঘোষণাকে উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন ট্রাম্প
আল জাজিরা মামলার প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন অংশে বিমান ও স্থল হামলায় কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত। গাজা সিটির আল-ফালাহ স্কুলসহ আশ্রয়কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত ও পরে উদ্ধারকারীদের ওপর অতিরিক্ত আক্রমণ ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। বহু মানুষ দক্ষিণাঞ্চলের দিকে পালাচ্ছেন; কিন্তু রাস্তা ও মহাসড়কগুলোতেও হেলিকপ্টার, ড্রোন ও ট্যাঙ্ক সহ হামলার ঘটনা অভিযোগ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যসংস্থার প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী চলতি সংঘর্ষে মৃতদের মোট সংখ্যা ও আহতের পরিসংখ্যান দিন দিন বাড়ছে—দৈনন্দিন খাদ্য-ত্রাণ বিঘ্ন এবং দুর্ভিক্ষের খবরও ব্যপ্ত।
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের সিটিতে থাকা নাগরিকদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করার হুঁশিয়ারি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এটিকে নির্বাচিত জনগোষ্ঠীর ওপর সামরিক প্রয়োগের পূর্বসূচনা হিসাবে দেখছে।
আরও পড়ুন: গাজায় প্রথম দফায় মুক্তি পেলেন যারা
গাজার চিকিৎসা সূত্র বলছে, বিদ্যমান দুর্ভিক্ষ ও চিকিৎসা অবকাঠামোর ধ্বংসের কারণে হতাহতদের সঠিক চিকিৎসা ও রিলিফ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধারকারীরা বারবার জানিয়েছেন— নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছানো মানুষের পথজাতেই তারা হামলার শিকার হচ্ছেন; এটি পুনরাবৃত্ত অভিশপ্ত চিত্র তৈরি করছে।
বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার পর্যবেক্ষক, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি দেশের কর্মকর্তা এই পরিস্থিতি নতদ্রুত মনোযোগ দাবি করেছেন এবং দুই পক্ষের মধ্যে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি আহ্বান তুলছেন।