ভিন দেশে সরকার উৎখাতের মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২৩ অপরাহ্ন, ০২ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:২৩ অপরাহ্ন, ০২ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশে দেশে সরকার উৎখাত ও শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার মার্কিন নীতির যুগ শেষ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড। তাঁর মতে, ওয়াশিংটনের এই পুরোনো পররাষ্ট্রনীতি বন্ধুত্ব নয়, বরং শত্রু ও নিরাপত্তা হুমকি বৃদ্ধি করেছে; নষ্ট করেছে লক্ষ-কোটি ডলার এবং ঘটিয়েছে অসংখ্য প্রাণহানি।

তিনি বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এখন এক নতুন পররাষ্ট্রনীতির পথে, যেখানে যুদ্ধ নয়, কূটনীতিই হবে শান্তির ভিত্তি।

আরও পড়ুন: তুরস্ক থেকে দেশে ফিরলেন ৫ লাখের বেশি সিরীয় শরণার্থী

গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বাহরাইনে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সিকিউরিটি স্টাডিজ (আইআইএসএস) আয়োজিত বার্ষিক নিরাপত্তা সম্মেলন ‘মানামা সংলাপ’-এ অংশ নিয়ে গ্যাবার্ড এসব মন্তব্য করেন।

তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, “পুরোনো ওয়াশিংটনের চিন্তাধারা আমরা পেছনে ফেলে আসতে চাই। দশকের পর দশক ধরে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি অকার্যকর ও অন্তহীন চক্রে আটকে ছিল—যেখানে লক্ষ্য ছিল শাসন পরিবর্তন বা রাষ্ট্র পুনর্গঠন। ফলে আইএসআইএসের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের উত্থান হয়েছে, হারিয়েছি বহু জীবন ও বিপুল অর্থ।”

আরও পড়ুন: গাজায় হামলা চলছেই, ত্রাণের ৭৫ শতাংশই আটকে রেখেছে ইসরায়েল

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আব্রাহাম চুক্তির পরিধি বাড়াতে চান। এটি “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির বাস্তব রূপ, যেখানে সামরিক হস্তক্ষেপ নয়, বরং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

গ্যাবার্ড উল্লেখ করেন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে উত্তর কোরিয়া, সার্বিয়া–কসোভো, ভারত–পাকিস্তান, ইসরায়েল–ইরান, আর্মেনিয়া–আজারবাইজান, কম্বোডিয়া–থাইল্যান্ডসহ নানা অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি ও শান্তি চুক্তি নিশ্চিত করেছে। এমনকি গ্র্যান্ড ইথিওপিয়ান রেনেসাঁ ড্যাম ইস্যুতেও সম্ভাব্য সংঘাত ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “হামাসের হাতে আটক জীবিত জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি—সবই ট্রাম্প প্রশাসনের কূটনৈতিক উদ্যোগের ঐতিহাসিক সাফল্য। এখন সময় যৌথ স্বার্থ ও পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে টেকসই শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়ার।”

গ্যাবার্ডের ভাষায়, “আমেরিকা ফার্স্ট মানে বিচ্ছিন্নতা নয়; বরং সরাসরি কূটনীতিতে অংশগ্রহণ, সাহসী উদ্যোগ গ্রহণ, এবং পারস্পরিক সার্বভৌম স্বার্থের ভিত্তিতে অংশীদারত্ব গড়ে তোলা।”

তিনি বলেন, বাহরাইন শান্তি ও সংলাপের মাধ্যমে বিশ্বকে দেখিয়েছে, কিভাবে যৌথ স্বার্থ ও সহযোগিতা টেকসই স্থিতিশীলতার ভিত্তি হতে পারে।

শেষে গ্যাবার্ড জোর দিয়ে বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র এমন এক ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে, যেখানে যুদ্ধ নয়, সহযোগিতাই নিরাপত্তার ভিত্তি হবে, আর শান্তিই হবে সমৃদ্ধির চাবিকাঠি।”