অভিযুক্ত স্ত্রী সামিরাসহ ১১ জন
সালমান শাহর মৃত্যুর তিন দশক পর হত্যা মামলা দায়ের
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর প্রায় তিন দশক পর অবশেষে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) মধ্যরাতে রাজধানীর রমনা থানায় সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হকসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আদালতের নির্দেশে সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনায় পুনঃতদন্তের নির্দেশ আসার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই এই মামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: দেশের মানুষ নির্বাচনমুখী, এখন ভোট স্থগিতের সময় নয়
আলমগীর কুমকুম বলেন, সালমান শাহর বাবা ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। তিনি সারাজীবন চেষ্টায় ছিলেন যেন অপমৃত্যুর মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপ নেয়। কিন্তু সেই চেষ্টার মধ্যেই তিনি মারা যান। এখন এতদিন পর মামলাটি হয়েছে। ইনশাআল্লাহ সবাই দেখবে, এটা আত্মহত্যা নয়, হত্যা।
মামলার এজাহারে প্রথম আসামি হিসেবে নাম রয়েছে সামিরা হকের, এরপর আছেন ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুসি, চলচ্চিত্রের খলনায়ক ডন, এবং আরও কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তি। মোট অভিযুক্তের সংখ্যা ১১ জন, পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার ‘হেভিওয়েট’ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৭ জন ট্রাইব্যুনালে
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ জানান, আমরা মামলায় এমন অপশন রেখেছি যাতে ভবিষ্যতে কেউ মারা গেলে তাকে বাদ দেওয়া যায়, আবার নতুন তথ্য এলে তা সংযুক্ত করা যায়।
দীর্ঘ তদন্তের অবসান ও নতুন অধ্যায়ের সূচনা
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর, ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তখন থেকেই শুরু হয় দীর্ঘ তদন্তযাত্রা, যা প্রায় তিন দশক ‘অপমৃত্যু মামলা’ হিসেবেই চলতে থাকে।
পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তাদের প্রতিবেদনে জানায়, সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। তবে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী শুরু থেকেই এই প্রতিবেদন মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দাবি করে আসছেন, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে।
অবশেষে তাঁর দাবির ধারাবাহিকতায় মামা আলমগীর কুমকুম আনুষ্ঠানিকভাবে হত্যা মামলা দায়ের করায় এই ঘটনায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
এর আগে সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, সালমান শাহর মৃত্যুর তদন্তে পদে পদে অন্যায় হয়েছে, কেউই দায়িত্বশীল আচরণ করেনি। আদালতের এই মন্তব্যের পরই মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশ আসে।





