ঢাকায় কোনো কাঁচা বস্তি থাকবে না, দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:২২ অপরাহ্ন, ২৫ মে ২০২৪ | আপডেট: ২:৫২ অপরাহ্ন, ২৫ মে ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকায় আর কোনো কাঁচা বস্তি থাকবে না। সরকার সকলের জন্য সুন্দর পরিবেশে বসবাসের ব্যবস্থা করবে।

শনিবার (২৫ মে) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: সিএমপির সাংবাদিক নির্যাতন: ঘুসি আকবরের পর ডিসি আমিরুল

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিচ্ছি। বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করে দিচ্ছি। যে বস্তিতে যেরকম ভাড়া সেরকম ভাড়াই দেবে। কিন্তু তারা ফ্ল্যাটে থাকবে। শুধু বড়লোকেরাই ফ্ল্যাটে থাকবে সেটা হতে পারে না, আমাদের রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে দিন মজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। স্বল্প ভাড়া, কেউ যদি প্রতিদিন ভাড়া দিতে চায়, সেই ব্যবস্থা আছে। কেউ যদি সাত দিনের ভাড়া দিতে চায়, সে ব্যবস্থা আছে। কেউ মাসের ভাড়া দিতে চাইলে সে ব্যবস্থাও হবে। আমরা ইতিমধ্যে ৩০০ পরিবার তুলেছি। 

পরিবেশ রক্ষার গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের এক টুকরো জমি আছে তারা একটা ফুলের গাছ, একটা ফলের গাছ হলেও লাগান। যাদের গ্রামের বাড়ি আছে সেখানে যেন অনাবাদি জমি না থাকে সেই দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। 

আরও পড়ুন: ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এতে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস,  ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহম্মদ ইব্‌রাহিম। 

সরকার প্রধান বলেন, আমাদের যুবসমাজ লেখাপড়া করে কাজ পায় না, সেখানে আমরা স্টার্টআপ প্রোগ্রাম নিয়েছি। যারা কম্পিউটার শিখবে, ডিজিটাল সিস্টেম শিখবে। তারা ছাড়াও অন্য সকলে এখানে ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারবে। কোম্পানির আইন পরিবর্তন করে এক ব্যক্তি যাতে কোম্পানি খুলতে পারে সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছি। একটা কর্মসংস্থান ব্যাংক করেছি। যে ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে আমাদের তরুণরা অন্তত দুই লাখ টাকা নিতে পারে। এককভাবে বা কয়েকজনের মিলে যাতে বিভিন্ন ব্যবসা দাঁড় করাতে পারেন। 

পাস করে চাকরির সন্ধানে না ছোটার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিজেই নিজের বস হবেন, নিজের চাকরি দেবেন, নিজে উদ্যোক্তা হবেন, নিজের চাকরি দিতে পারবেন, সেভাবে তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। সারা বাংলাদেশে আমরা কম্পিউটার ট্রেনিং এবং ইনকিউবেটর সেন্টার করে দিচ্ছি। স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি। ট্রেনিংয়ের সাথে সাথে সব ধরনের সুযোগ আমরা করে দিচ্ছি। শুধু দেশে নয়, বিদেশে কাজ করতে গেলেও উপযুক্ত ট্রেনিং নিয়ে যাওয়া ভালো। দালাল ধরে টাকা খরচ করে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরার চেয়ে নিজের দেশে থেকে কাজ করা অনেক লাভবান। এ ব্যাপারে মানুষকে একটু উজ্জীবিত  করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের যুব সমাজকে লেখাপড়া করতে হবে। মাদক, নেশা, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কাছ থেকে দূরে থাকতে হবে। একটা মাদকাসক্ত সন্তান যদি থাকে তাহলে সেই পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। তোমরা বাবা-মাকে কষ্ট দাও কেন? নিজেকে কষ্ট দাও কেন? যারা মাদক সেবন করে তারা পরবর্তীতে নিজেরাই অসুস্থ হয়ে যায়। নিজেদের ঘর সংসার হয় না, কিছু হয় না। জনগণকে একটা সচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার।

আসন্ন ঈদুল আজহায় যেখানে সেখানে পশু কোরবানি না করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে পশু কোরবানির জন্য আরও আধুনিক ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে সিটি করপোরেশনগুলোকে। শুধু সিটি করপোরেশন নয়, দেশব্যাপী আধুনিক ব্যবস্থা রাখতে হবে, সেই নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। যেন শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে। পানির যাতে অপচয় না হয়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর জলাশয় ভরাট করা যাবে না, এটি ভরাট করে বহুতল ভবন  নির্মাণ করাও যাবে না।

তিনি আরও বলেন, দেশ যত উন্নত হচ্ছে মানুষের কাজকর্ম ততো বাড়ছে। আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। এরইমধ্যে রাজধানীবাসীর যাতায়াতের জন্য ঢাকাতে একটি মেট্রো রেলপথ তৈরি করা হয়েছে। আরও কয়েকটি মেট্রো রেলপথ নির্মাণ করা হবে। কিছু ওপর দিয়ে যাবে, আবার কিছু পাতাল দিয়ে যাবে। সেইভাবেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।