গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জনগণ আর কতদিন অপেক্ষা করবে, প্রশ্ন নজরুল ইসলামের

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৬:০০ অপরাহ্ন, ২০ মে ২০২৫ | আপডেট: ১:২৩ অপরাহ্ন, ১০ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জনগণ আর কতদিন অপেক্ষা করবে এরকম প্রশ্ন রেখেছেন নজরুল ইসলাম খান। মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এরক প্রশ্ন তুলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গর্বিত জনগণ আমরা… যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছি, যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছি এবং এখনো আমরা গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় বসে আছি। সেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলছি, স্লোগান দিচ্ছি, সভা-সমাবেশ করছি। কত দিন? কত বার আমাদেরকে এই কাজ করতে হবে?

আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্নে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো ব্যবস্থা নেই: এনবিআর

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ছেলে-মেয়ে প্রাইমারি স্কুলে পড়ে… পরিশ্রম করে হাই স্কুলে যায়, হাইস্কুলে পড়াশুনা করে কষ্টকে কলেজে যায়, সেখানে পড়াশুনা করে কষ্ট করে ইউনিভার্সিটিতে যায়।

আর আমাদেরকে এই বাংলাদেশের জনগণকে বার বার সেই সাপ-লুড়ু খেলার মতো ৯৩ থেকে ৩ এ চলে আসতে হইতেছে। কেনো? আমরা ৯৩ থেকে ৯৪, ৯৫, ৯৬, ৯৭ কইরা ১০০ তে পৌঁছতে চাই। এই পথে যারাই বাধা সৃষ্টি করবে আমরা তাদের ওই সাপ খেলা লুডুর সাপ বলে মনে করি।

আরও পড়ুন: ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করতে সংগ্রহ করা হচ্ছে ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা

তিনি অভিযোগের সুরে বলেন, তারা আমাদেরকে বার বার ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। নানা রকমের প্রশ্ন তোলা হচ্ছে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টির জন্য। এটা করতে হবে আগে, ওটা করতে হবে আগে… আগে-পরে করার প্রশ্ন তো নাই। যা যা করা দরকার সবই করতে হবে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমি যেটা বলতে চাই যে, ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসর ছিল, যারা নেতৃত্ব দিয়েছে, যারা তাদের সাথে ছিল তাদের সবার বিচার অবশ্যই করতে হবে। কারণ তারা আমার বিরুদ্ধে, আমার পরিবারের বিরুদ্ধে, আমার বন্ধুর বিরুদ্ধে, আমার সহকর্মীর বিরুদ্ধে, আমার দেশবাসীর বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। অবশ্যই বিচার চাই।

কিন্তু সেই বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে না। এই প্রশ্ন যারা তোলে তারা আসলে এই কথা বলে জনপ্রিয় কথার আড়ালে নির্বাচনটাকে বিলম্বিত করতে চায়।

তিনি বলেন, আপনি জুলুম করতে পারেন যে, তিন দিনের মধ্যে বিচার করতে হবে, সাত দিন বা দশ দিন বা এক মাসের মধ্যে বিচার করতে হবে… এটা করা উচিত? সুবিচারের জন্য এই শব্দটা কি ভালো?আমরা বলেছি যে, দ্রুত বিচার অবশ্যই করতে হবে। কত দিন আগে আমরা লিখিতভাবে সরকারকে বলেছি।

আমরা বলেছি আরেকটা ট্রাইব্যুনাল করেন আপনারা, একটা ট্রাইব্যুনালে হবে না যে এতো বেশি লোকের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ হয়েছে…. করে না করে না… করতে করতে কয়েকদিন আগে করল। এখন পর্যন্ত সেটা কার্যকর হয় নাই। দোষটা কার? আমাদের? ইনভেস্টিগেশন অফিসার নাই বেশি আরও দিতে হবে… সেটা করা হচ্ছে না, বিলম্ব করা হচ্ছে। আসল উদ্দেশ্যটা কি?

জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। 

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এই যে সংস্কার এবং নির্বাচনকে সামনা সামনি করে দেয়া এটা আরেকটা অপরাধ, এটা ভুল। আরে ডেমোক্রেসি ইট সেলফ ইজ এ রিফর্ম।”

এর আগে রাজতন্ত্র ছিল, এর আগে সামন্তবাদ ছিল। গণতন্ত্র যে এসেছে এটাও তো একটা সংস্কারের মধ্য দিয়ে এসেছে, একটা বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে এসেছে…আর সেই গণতন্ত্র সারা দুনিয়ায় অনেকভাবে কার্যকর। আমেরিকায় যেভাবে গণতন্ত্র কার্যকর হয় ইংল্যান্ডে সেভাবে হয় না, ফ্রান্সে যে রকম কার্যকর হয় ভারতে সেভাবে হয় না, নেপালে যে রকম হয় বাংলাদেশে সেরকম হয় না…  একেক দেশে একেকভাবে গণতন্ত্র কার্যকর হয়। কাজেই সংস্কার আর গণতন্ত্র পরস্পর বিরোধী না.. এটা পরিপূরক। সেজন্যই আমরা বলি, বিচারও হতে হবে, সংস্কারও হতে হবে, নির্বাচনও হতে হবে এবং সবই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে।

জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।