৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ দিতে সরকারের প্রতি নাহিদ ইসলাম এর আহ্বান

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৫:৫৮ অপরাহ্ন, ৩০ জুন ২০২৫ | আপডেট: ২:৩৬ পূর্বাহ্ন, ০১ জুলাই ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে সরকারের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার ঘোষণাপত্রের বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি একটি দলকে ইঙ্গিত করে সতর্ক করেন, কেউ যদি দলীয় স্বার্থে জাতীয় ঐকমত্যের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে, তবে সরকারকে সাহসিকতার সঙ্গে অন্যসব পক্ষ ও সাধারণ জনগণকে নিয়ে এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: বাধ্যতামূলক অবসরে ডিএমপির সাবেক ৯ ওসি

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র হচ্ছে জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, শহীদ, আহত ও নেতৃত্বদের অবদান ও  রাজনৈতিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষা এবং জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষার সংজ্ঞায়ন নিশ্চিতে একটি জাতীয় দলিল, যা পরবর্তীতে আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি পাবে।

৩১ ডিসেম্বর ছাত্র নেতৃত্ব জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিল দাবি করে তিনি বলেন, সরকার কিন্তু সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে সরকারিভাবে ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিল। ছাত্র নেতৃত্ব তাই তাদের উদ্যোগ থেকে সরে এসেছিল।

আরও পড়ুন: হাসিনার প্রিজম দিয়ে বাংলাদেশকে দেখায় ভারতকে মূল্য দিতে হচ্ছে

তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন দল বা পক্ষ থেকে খসড়া ঘোষণাপত্র চেয়েছিল। সেই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একটা খসড়া ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছিল। সবগুলা ডকুমেন্ট মিলিয়ে একটা কমন দলিল তৈরি করার কথা ছিল যা সব পক্ষ একসাথে উদযাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করবে। কিন্তু সরকার দুই দুইবার সময় দিয়েও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। কেনো করেনি, কোথায় বাধা পেলো তাও স্পষ্ট করেনি। সরকারের কাছে অবশ্যই আমরা জবাবদিহি চাই এবং আমরা চাই রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এ ঘোষণাপত্র জারি করা হউক যা পরবর্তীতে সংবিধানে যুক্ত করার কমিটমেন্ট থাকবে।

এ সময় নাহিদ ইসলাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার যদি কোনো উদ্যোগই না নেয় আমরা বসে থাকব না। আমাদের বক্তব্য, আমাদের ইশতেহার অবশ্যই আমরা প্রকাশ করবো। অন্য সকল পক্ষকেও বলবো আপনাদের ইশতেহার তৈরি করুন। সবাই মিলে আমরা দলিল তৈরি করতে পারলে সরকার সেটা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে। 

জুলাই ঘোষণাপত্র শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকেই পাঠ করা হবে বলে জানান তিনি।

জুলাই সনদের রূপরেখা তুলে ধরে স্ট্যাটাসে তিনি আরও লিখেন, জুলাই সনদে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা থাকবে। সংবিধানের কোন কোন যায়গায় পরিবর্তন হবে সে বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্যমত্যের দলিল হবে জুলাই সনদ যেখানে সকল দল স্বাক্ষর করবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি এখনো ঠিক হয় নাই গণভোট, গণপরিষদ অথবা সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে এই সনদ কার্যকর হবে। পরবর্তী নির্বাচিত সরকার জুলাই সনদ অনুযায়ী সংস্কারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাধ্য থাকবে।

জুলাই-অগাস্টে জুলাইয়ে ঘোষণাপত্র ও সনদ দুইটাই দেওয়া সম্ভব জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কোনো একটি পক্ষ যদি দলীয় স্বার্থে ঐকমত প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে তাহলে সরকারে উচিত ভয় না করে অন্য সকল পক্ষ ও সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করা। জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র দিতে না পারলে সরকারের এখতিয়ার থাকবে না জুলাই উদযাপনে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার।

আমরা দৃঢ়ভাবে চাই ৫ অগাস্ট তথা ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ রচিত হোক। সকল পক্ষ সকল ধরনের ছাড় দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করুক, যোগ করেন তিনি।

দলের কর্মসূচির কথা মনে করিয়ে দিতে তিনি আরও লিখেন, আগামীকাল থেকে আমাদের পদযাত্রা। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রায়’ আপনাদের স্বাগতম। পথে প্রান্তরে কথা হবে আপনাদের সাথে।