ব্রিটিশ গণমাধ্যমে শেখ হাসিনার আমলে অর্থপাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম। প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস তাদের নতুন এক অনুসন্ধানী ডকুমেন্টারিতে দাবি করেছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ’স মিসিং বিলিয়নস: স্টোলেন ইন প্লেইন সাইট’ শিরোনামের এই ডকুমেন্টারিতে একাধিক অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আন্দোলনকারী অংশগ্রহণ করেন। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে এত বিশাল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার হলো এবং তা আদৌ ফেরত আনা সম্ভব কিনা।
আরও পড়ুন: এটিইউ প্রধানের সঙ্গে এফবিআই কর্মকর্তাদের মতবিনিময়
ডকুমেন্টারিতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ মহলের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অর্থ পাচারের অভিযোগ ছিল। বিশেষ করে, যুক্তরাজ্য এই পাচারের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়, যেখানে লন্ডনের শক্তিশালী আর্থিক খাত ও রিয়েল এস্টেট বাজারে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে।
এতে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার পরিবারের নামও উঠে আসে। রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির সাবেক এমপি টিউলিপ সিদ্দিকও তদন্তের মুখে পড়েন এবং মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় অভিযোগ করা হয়, হাসিনা ও রেহানার পরিবার বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
আরও পড়ুন: সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তি রয়েছে। ব্রিটিশ অপরাধ দমন সংস্থা (এসসিএ) এরই মধ্যে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি জব্দ করেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের হিসাব অনুযায়ী, শেখ হাসিনার শাসনামলে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। অভিযোগ আছে, শেখ হাসিনা সরকারের সময় সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় ব্যাংক দখল করে সাবেক শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠরা। অস্ত্রের মুখে অনেক পরিচালককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং এরপর ওই ব্যাংকগুলো থেকে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাংক ও ব্যবসা খাত থেকে পাচার হওয়া এই অর্থের পরিমাণ ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার।