রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সিআইডি প্রতিবেদন দাখিল, আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম শুরু

জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘সংস্কার, নির্বাচন ও বিচার’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সিআইডি তার দায়িত্ব পেশাদারিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেছে।
সিআইডি মাত্র পাঁচ মাসেরও কম সময়ে তদন্ত শেষ করে ১৪ আগস্ট ২০২৫ খ্রি. সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং মোট ২৮৬ জন আসামির বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১২১/১২১ক/১২৪ক ধারায় বিজ্ঞ আদালতে বিচারের জন্য প্রতিবেদন দাখিল করে। এ প্রতিবেদনটির প্রেক্ষিতে আদালত আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম শুরু করার আদেশ দেন। আজ ১৪/১০/২০২৫ খ্রি. অতি চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, আদালত নং-১৮ এই আদেশ প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রিক্রুট ব্যাচ-২০২৫ এর সেনাবাহিনী প্রধান কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত
মামলাটি ২৭/০৩/২০২৫ তারিখে রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত মামলা নং-২২২/২০২৫ হিসেবে রুজু হয়। মামলা রুজুর পর সিআইডি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, সার্ভার এবং যোগাযোগ মাধ্যমের তথ্য সংগ্রহ ও ফরেনসিক বিশ্লেষণ সম্পন্ন করে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য গ্রহণও দ্রুত সম্পন্ন করা হয়।
গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর “জয় বাংলা ব্রিগেড” নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে জুম (Zoom) মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশ-বিদেশের অনেকেই অংশগ্রহণ করেন। সিআইডি প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখতে পায়, সভায় বর্তমান সরকার উৎখাতের আহ্বান, গৃহযুদ্ধের পরিকল্পনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবসহ রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য আছে।
আরও পড়ুন: জুলাই জাতীয় সনদ, চূড়ান্ত কপি রাজনৈতিক দলগুলোর নিকট প্রেরণ
সিআইডি এই তথ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে জানায় এবং অনুমতি প্রাপ্ত হয়ে আদালতে অভিযোগ দায়েরের ক্ষমতা পায়। তদন্তে সিআইডি আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বি আলমসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এই রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
মামলায় ইতোমধ্যেই গ্রেফতারকৃত ৯১ জনকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাকি ১৯৫ জন আসামী পলাতক রয়েছেন। আজ ১৪ অক্টোবর আদালত জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে প্রধান আসামীসহ অনুপস্থিত আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম পরিচালনার আদেশ দেন।
সিআইডি জানিয়েছে, এই মামলায় তার ভূমিকা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ‘বিচার’ এজেন্ডার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।