উন্মুক্ত স্থানে মালামাল রাখা নিয়ে ঝুকি বাড়ছে
চার দিন পর শাহজালালে নামছে কার্গো ফ্লাইট

চার দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর ) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে প্রথম কার্গো ফ্লাইট। প্রায় ৪০০ টন আমদানি পণ্য নিয়ে হংকং থেকে ঢাকায় আসছে ক্যাথে প্যাসেফিক এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো বিমান। এর মাধ্যমে আবারও শুরু হচ্ছে নিয়মিত আমদানি পণ্য পরিবহন কার্যক্রম।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর কিছু আমদানি পণ্য যাত্রীবাহী বিমানের মাধ্যমে আনা হলেও নতুন কোনো কার্গো ফ্লাইট এখনো নামেনি। মঙ্গলবারের এই ফ্লাইটটি হবে আগুন লাগার পর প্রথম আন্তর্জাতিক কার্গো অবতরণ।
আরও পড়ুন: ইমপোর্ট কুরিয়ার সেকশন থেকে সূত্রপাতের প্রাথমিক ধারণা: বেবিচক চেয়ারম্যান
প্রথম ফ্লাইটে আনা পণ্যগুলো রাখার জন্য রপ্তানি ভিলেজের পাশে একটি উন্মুক্ত স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। খালাস শেষে এসব পণ্য ৯ নম্বর গেট দিয়ে বাইরে নেওয়া হবে।
তবে উন্মুক্ত স্থানে পণ্য রাখার ঝুঁকি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষের। বৃষ্টি হলে পণ্য ক্ষতির আশঙ্কা থাকায় দ্রুত একটি অস্থায়ী সেড নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিজস্বভাবে কাজটি জটিল হওয়ায় বিজিএমইএর সহযোগিতায় সেড নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টাকে ৬ আন্তর্জাতিক সংগঠনের চিঠি
সূত্র জানায়, সোমবার বিজিএমইএ নেতারা এক বৈঠকে বসবেন, যেখানে সেড নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
এদিকে, আমদানি কার্যক্রম সচল রাখতে রপ্তানি কার্গো ভবনের কিছু অংশ ব্যবহার করে দাপ্তরিক কাজ চালানো হচ্ছে। নতুন ভবন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এখানেই কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বিমান কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, সব কিছু স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমদানি পণ্য খালাসের কাজ প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা চালিয়ে যাওয়া হবে। এ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকেও সম্পৃক্ত রাখা হচ্ছে।
লেনদেন কার্যক্রম বজায় রাখতে রপ্তানি কার্গো ভিলেজের এক পাশে সীমিত পরিসরে সিটি ব্যাংকের একটি শাখাও চালু করা হয়েছে।
তবে এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি আমদানি পণ্য ছাড়ের প্রক্রিয়া। পুড়ে যাওয়া কার্গো ভিলেজের নেটওয়ার্ক সিস্টেম সচল না থাকায় বর্তমানে বিমানের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত ল্যাপটপ ব্যবহার করে সীমিত পরিসরে কাজ করছেন। এতে কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা দিয়েছে এবং আমদানিকারক ও এজেন্টদের ভোগান্তি বাড়ছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে বিকল্প কার্গো হ্যান্ডলিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তবে ডিজিটাল সিস্টেম বন্ধ থাকায় কাজ চলছে আংশিকভাবে।
গত শনিবার দুপুরে শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্সে ভয়াবহ আগুন লাগে। প্রায় নয় ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সম্পূর্ণ নেভাতে সময় লাগে এক দিনেরও বেশি।
এ ঘটনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামসহ বিভিন্ন কোম্পানির প্রায় হাজার কোটি টাকার পণ্য পুড়ে যায়।