দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো আলু উৎসব

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৫:০৭ অপরাহ্ন, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আলু চাষীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে পুরাতন আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

উপদেষ্টা শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশন কর্তৃক প্রথম বারের মতো আয়োজিত আলু উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান। 

আরও পড়ুন: ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

উপদেষ্টা বলেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ১২ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে যা চাহিদার তুলনায় প্রায় ২২ লক্ষ মেট্রিক টন বেশি। ২০২৫ সালে আলু উৎপাদন খরচ কেজি প্রতি স্থানভেদে ১৪ থেকে ১৭ টাকা। হিমাগারে সংরক্ষণ খরচ, পরিবহন, বস্তা, লেবার ও অন্যান্য খরচসহ কেজি প্রতি আলুর হিমাগার গেটে খরচ দাঁড়িয়েছে ২০-২৫ টাকা। বিপরীতে আলু চাষী কৃষকগণ হিমাগার গেটে ৮ থেকে ১৬ টাকা কেজি মূল্যে আলু বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন যা তাদের উৎপাদন খরচের চেয়েও অনেক কম। এর ফলে আলু চাষীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত কোল্ড স্টোরেজে পুরাতন আলু সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাছাড়া এ বছর নতুন আলু বাজারে আসতে ১৫ দিন বেশি সময় লাগবে। তাই কৃষকদের বৃহত্তর স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা হয়তো সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে। তবে খাদ্য উৎপাদনের কারিগর কৃষকরা লাভবান হবেন। তিনি এসময় কেজি প্রতি আলু উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান। 

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, দেশে বিপুল পরিমাণে আলু উৎপাদিত হলেও আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। বাংলাদেশে মাত্র ২% আলু প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয় অথচ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এর পরিমাণ ৭%। তাই আলু প্রক্রিয়াজাতকরণের উপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আর এজন্য প্রয়োজন প্রক্রিয়াজাত উপযোগী আলুর উত্তম জাত নির্বাচন ও তার চাষাবাদ। উপদেষ্টা বলেন, আমদানিকৃত আলু বীজের প্যাকেটে এর নির্দিষ্ট দাম লিখে দিতে হবে। এতে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

আরও পড়ুন: ৩৯ ডিআইজি ও অতিরিক্ত ডিআইজি রদবদল

কৃষি উপদেষ্টা বলেন, এ বছর পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তারপরও কারো কারো কারসাজিতে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৩৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের স্বার্থে আমরা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি। বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা না আসা পর্যন্ত পেঁয়াজ আমদানি চলবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ-এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ.কে. ফজলুল হক, বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস-এর রাষ্ট্রদূত Joris Van Bommel, Hangzhou Fima Expo Co. Ltd., China-এর জেনারেল ম্যানেজার Tony Lv প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর/সংস্থা/এসোসিয়েশন/চেম্বার-এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত হিমাগার মালিক, আলু চাষী কৃষক, ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ ও উদ্যোক্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।