ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে হলে বিভাজন নয়, ঐক্য প্রয়োজন: আমীর খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিভাজনের রাজনীতি নয়, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, ‘বিএনপি কখনও বিভাজনের রাজনীতি করেনি, আর করবেও না।’
শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রামের জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার দ্বিতীয় দিনের ধর্ম সম্মেলন ও সাধু-সন্ত ঋষি বৈষ্ণব মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পরিবহন সেক্টরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে : শিমুল বিশ্বাস
আমীর খসরু বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানই প্রমাণ করে যে এটি একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। এই চেতনাকে মুখে নয়, বাস্তবে ধারণ করতে হবে। যদি সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক হওয়া যায়, তবে দেশে কোনও হানাহানি থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমি ‘সংখ্যালঘু’ শব্দটিও মানি না। বাংলাদেশে সবাই বাংলাদেশি। সবার সমান অধিকার আছে, এবং সেই অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। আমরা সবাই মিলে একটি জাতি, একটি দেশ, একটি সমাজ গঠন করি।”
আরও পড়ুন: রুকন না হলে চাকরি থাকবে না বলেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি: রিজভী
সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, “যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছে তারা বারবার ধ্বংস হয়েছে। এ দেশের সাধারণ মানুষ কখনও সাম্প্রদায়িকতাকে গ্রহণ করেনি।”
তিনি বলেন, “আজকের বাংলাদেশে মানুষ নতুন প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সেই নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে কারো সঙ্গে বিভাজন নয়, বরং সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ধর্ম থাকবে, সংস্কৃতি থাকবে, সবাই নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করবে—এটাই একটি গণতান্ত্রিক ও সহনশীল সমাজের বৈশিষ্ট্য।”
রাজনৈতিক মতপার্থক্য স্বাভাবিক উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, “যেমন ধর্মে ভিন্নতা আছে, তেমনি রাজনীতিতেও মতভেদ থাকবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আর কে দাশ রূপু।
মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালন করেন বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সচিদানন্দ পুরি মহারাজ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, পাচুরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী, ভোলানন্দ গিরি মন্দিরের অধ্যক্ষ উমেশানন্দ গিরি, শ্রীমৎ সনাতনঋষি, বিদহানন্দ, রামানন্দ পুরি, অজপানন্দ পুরি, পরিতোষানন্দ গিরি, রাজীব ধর তমাল, শ্রদ্ধানন্দ ব্রহ্মচারী, শিবানন্দ গিরি, মহাব্রতনন্দ, রুদ্রাষানন্দ পুরি, যোগানন্দ ব্রহ্মচারী, স্বামী অরুণানন্দ, বাবলানন্দ ও প্রেমময় আনন্দ ব্রহ্মচারী।
ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক ঐক্যের বার্তা নিয়ে আয়োজিত এই মহাসম্মেলনে বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও অতিথি উপস্থিত ছিলেন।