জাতপাত বিলোপ জোটের আত্মপ্রকাশ, ১৫ দফা দাবি

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ন, ১১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৭:৩৩ অপরাহ্ন, ১১ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশে চরম বৈষম্যের শিকার নমঃশূদ্র, দলিত, হরিজন, চা-শ্রমিক ও সমতলের আদিবাসীদের বৈষম্যের কথা তুলে ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতপাত বিলোপ জোট আত্মপ্রকাশ’ করেছে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আত্মপ্রকাশ করে দলটি।

আরও পড়ুন: নির্বাচনকে বিলম্বিত করতেই পিআর পদ্ধতির নামে আন্দোলন হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

জাতপাত বিলোপ জোটের মুখপাত্র এডভোকেট উৎপল বিশ্বাসসহ আরো অনেকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের রাজনীতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন। ১৯৫২ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের নাগরিক অভ্যুত্থান ও ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের পরম্পরা। ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমিতে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্য বিলোপের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে এবং কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে চরম বৈষম্যের শিকার নমঃশূদ্র, দলিত, হরিজন, চা-শ্রমিক ও সমতলের আদিবাসীদের উপর চলমান বৈষম্য অবসানের উদ্দেশ্যে সরকার কোনো কমিশন গঠন করেনি। এমনকি গঠিত কমিশনগুলোতে ও সরকারের উপদেষ্টা পরিষদেও এই বঞ্চিত জনগোষ্ঠীগুলোর কোনো সদস্য নাই।

আরও পড়ুন: নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের নির্দেশনা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এই জোট বলতে শুধুমাত্র কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের ঐক্য বেঝায় না। এমনি কি এই ঐক্য শুধু ইস্যু ভিত্তিক স্বল্প মেয়াদী ঐক্য বোঝায় না। এই ঐক্য বলতে বোঝায় বাংলাদেশের ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের আদর্শিক ঐক্য; ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী সকল জনগোষ্ঠীকে সকল প্রকার সংস্কার থেকে মুক্ত করে, ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচির ভিত্তিতে অভিন্ন লক্ষে তথা গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তোলার লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।

জাতপাত বিলোপ জোটের ১৫ দফা দাবিগুলো হলো, 

১) বৈষম্য বিলোপ কমিশন-সহ বৈষম্য বিলোপ আইন পাশ করতে হবে।

২) আদিবাসী, দলিত, হরিজন ও চাশ্রমিকদের ভূমির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

৩) পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও চা-শ্রমিক-সহ দৈনিকভিত্তিতে নিযুক্ত শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি কমপক্ষে ৮০০ টাকা

করতে হবে।

৪) অনগ্রসর জনগোষ্ঠীগুলোর তালিকা সংবিধানের তফসিলে যুক্ত করতে হবে।

“নরাকারে ভূমণ্ডলে যত জন আছে। এক জাতি’ বলে মালা পাবে মোর কাছে।।

৫) অনগ্রসর জনগোষ্ঠীগুলোর সকল ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তির আওতায় এনে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা বৃত্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

৬) অনগ্রসর জনগোষ্ঠীগুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চ শিক্ষায় ৬% আসন সংরক্ষণ করতে হবে।

৭) অনগ্রসর জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ৬% আসন সংরক্ষণ করতে হবে।

৮) অনগ্রসর জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য সংসদের উভয় কক্ষে ৬% আসন সংরক্ষণ করতে হবে।

৯) সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় অন্তত একটি কাউন্সিলর পদ দলিত-হরিজন জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষণ

করতে হবে।

১০) আগামী আদমশুমারিতে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে হবে।

১১) ভূমিহীনদের মাঝে খাস জমি বিতরণ করতে হবে।

১২) সহজ শর্তে কৃষক ও জেলেদের ঋণ দিতে হবে। ১৩)কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।

১৪) আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করতে হবে।

১৫) জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

উক্ত দাবিগুলো জনগণের মাঝে প্রচারের ক্ষেত্রে আপনাদের বলিষ্ঠ ভূমিকা প্রত্যাশা করছি।