জুমআর দিন আজান শোনার পর যা করতে বলেছেন আল্লাহ ও রাসুল

Shakil
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৪৬ অপরাহ্ন, ১২ মে ২০২৩ | আপডেট: ১:৩৪ অপরাহ্ন, ১২ মে ২০২৩
ফাইল ফটো
ফাইল ফটো

নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) পরিবারিক কাজে স্ত্রীদেরকে সময় দিতেন। তাদের কাজে তিনিও হাত লাগাতেন। নামাজের আজান নবীজির (স.) কানে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে সব কাজ ছেড়ে দিতেন। এটি ছিল আমাদের প্রিয় নবীর অন্যতম ফজিলতপূর্ণ সুন্নাত কাজ।

তবে নবীজি (স.) জুমার দিন আজান শুনার সঙ্গে সঙ্গে কী করতেন বা আমাদের এসময় কী করতে হবে? এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা-ই দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাতের সঙ্গে আল্লাহ তাআলার এই নির্দেশ হুবহু মিল আছে।

আরও পড়ুন: নুসুক অ্যাপ এখন থেকে ইন্টারনেট ছাড়াই ব্যবহার করা যাবে

আল্লাহ তাআলা ও তার রাসুলের এই দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আজান শুনার পর কোনও কাজ করার সুযেগ নেই। কোরআনুল কারিমের ভাষ্যমতে এমটিই প্রমাণিত। আল্লাহ তাআলা বলেন-  يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

‘হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ৯)

আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক হোসেনি দালান থেকে তাজিয়া মিছিল শুরু

এ আয়াতে কারিমায় সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এসেছে, জুমআর নামাজের আজান হওয়ার সঙ্গ সঙ্গে হাতের সব কাজ রেখে মসজিদের দিনে নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে ছুটে চলা। আর প্রিয় নবি সব ওয়াক্তে আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে কী করতেন? তা-ও এসেছে হাদিসের বর্ণনায়-

২. হজরত আসওয়াদ বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে কি কি ধরনের কাজ করতেন? উত্তরে তিনি বললেন- كان يكون في مهن أهله، فإذا سمع بالأذان خرج ‘তিনি তার পরিবারের সব কাজে নিয়োজিত থাকতেন, তবে আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন।’ (বুখারি)

৩. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে কী কী কাজ করতেন? তিনি উত্তর দেন-كان بشرًا من البشر: يفلي ثوبه ويحلب شاته، ويخدم نفسه ‘তিনি একজন মানুষ ছিলেন, তিনি তাঁর কাপড় সেলাই করতেন, ছাগলের দুধ দহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই করতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)

সুতরাং প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি সাংসারিক সব কাজ আঞ্জাম দিয়ে আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদে নামাজের জন্য যেতে পারেন তবে মুমিন মুসলমানের কী হলো যে, তারা আজান শোনার পরও ঘরে বসে থাকবে?

আজান হলে মসজিদে যেতে হবে এনির্দেশনা দিয়েই মহান আল্লাহ থেমে থাকেননি বরং নামাজ শেষ হলে কী করতে হবে তাও বলেদিয়েছেন সুস্পষ্টভাষায়। তাহলো-

فَاِذَا قُضِیَتِ الصَّلٰوۃُ فَانۡتَشِرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ وَ ابۡتَغُوۡا مِنۡ فَضۡلِ اللّٰهِ وَ اذۡکُرُوا اللّٰهَ کَثِیۡرًا لَّعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ

এরপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জীবিকা অর্জর্নের উদ্দেশ্যে) ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) সন্ধান কর। আর আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ করতে থাকো। যাতে তোমরা (উত্তম জীবিকা পেয়ে) সফলকাম হও।’ (সুরা জুমআ : আয়াত ১০)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে আজান শোনার পরপরই নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে মসজিদে প্রবেশের তাওফিক দান করুন। আর নামাজ আদায়ের পর রিজিকের অনুসন্ধান করায় বরকত দিন; আমিন।