ভারতকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপের শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল ঘিরে উত্তেজনা একটু বেশিই ছিল। শিরোপা নির্ধারণী সেই ম্যাচে আটবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হতাশায় ডুবিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতল বাংলাদেশ। ফাইনালের মহারণে বাংলাদেশের ১৯৮ রানের জবাবে ১৩৯ রানে ভারত শেষ হলো।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াদুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যট করতে নেমে ৪৯.১ ওভারে ১৯৮ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: স্বপ্ন পূরণের পথে দাবাড়ু মুনতাহা, পাশে দাঁড়ালেন সাবেক ফুটবলার আমিনুল হক
১৯৯ রানের ছোটো এক লক্ষ্য। কিন্তু সেটাকেই ভারতের জন্য পর্বতসমান করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট। ভারতের কাউকেই থিতু হতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা।
দলের পক্ষে চল্লিশোর্ধ্ব দুটি ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ শিহাব জেমস ও রিজান হোসেন। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৩৫.২ ওভারে ১৩৯ রানেই থামতে হয় ভারতকে।
আরও পড়ুন: আইএল টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার দল পেলেন মোস্তাফিজ
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ৪ রানের মাথায় ফিরে যান আয়ুশ মহাত্র। ১ রান করে আল ফাহাদের বলে বোল্ড হন তিনি। এরপর ২৪ রানের মাথায় আরেক ওপেনার বৈভব সূর্যবংশীকে শিহাবের ক্যাচে পরিণত করেন মারুফ মৃধা। আইপিএলে সাড়া জাগানো বৈভব ৯ রানের বেশি করতে পারেননি।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটি বেঁধে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন আন্দ্রে সিদ্ধার্থ ও কার্তিকীয়া। তবে এই জুটিও বড় হতে দেননি রিজান। সিদ্ধার্থকে বোল্ড করে ২০ রানেই বিদায় করেন তিনি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ভারত। ৭৩ রানের মাথায় টানা দুই উইকেট হারিয়ে খাদে পড়ে যায় তারা। বিদায় নেন কার্তিকীয়া ও নিখিল কুমার।
উইকেট পতনের এই মিছিল অব্যাহত ছিল শেষ পর্যন্ত। কেবল একপ্রান্ত আগলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৬ রানের ইনিংস খেলে যান মোহামেদ আমান। হার্দিক রাজ সাতে নেমে খেলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রানের ইনিংস। বাকিদের ব্যর্থতায় ১৩৯ রানেই থামে ভারতীয়দের ইনিংস।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন ইকবাল হোসেন ইমন ও আজিজুল হাকিম। ২ উইকেট দখল করেন আল ফাহাদ। ১টি করে উইকেট নেন মারুফ মৃধা ও রিজান হোসেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ১৭ রানের মাথায় ফিরে যান ওপেনার কলিম সিদ্দিকী। তার বিদায়ে অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন অন্য ওপেনার জাওয়াদ আবরার।
জাওয়াদ-আজিজুল মিলে প্রাথমিক ধাক্কাটা সামাল দেন। তবে জুটি বড় হয়নি। দলীয় ৪১ রানের মাথায় ২০ রান করে বিদায় নেন জাওয়াদ। তার বিদায়ের পর আজিজুলের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মোহাম্মদ শিহাব জেমস। দুজন মিলে দলকে পঞ্চাশের ঘর পার করান।
এই জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দলীয় ৬৬ রানের মাথায় তুলে মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ারে ধরা পড়েন আজিজুল। তিনি ২৮ বলে করেন ১৬ রান। এরপর শিহাব ও রিজান হোসেন মিলে দারুণ একটা জুটি গড়েন। দুজন মিলে সাবলীল খেলে দলকে নিয়ে আগাতে থাকেন। ১২৮ রানের মাথায় শিহাব ৪০ রান করে বিদায় নিলে ভাঙে এই জুটি।
এরপর দ্রুতই বিদায় নেন দেবাশীষ দেবা (১)। দলকে দেড়শ পার করে একই পথ ধরেন ৪৭ রান করা রিজান। তার ৬৫ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৩টি চারের মার। রিজানের বিদায়ের পর সামিউন বশির এবং আল ফাহাদও বিদায় নেন দ্রুত।
এক প্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন ফরিদ হোসেন। তাকে সঙ্গ দেন মারুফ মৃধা। ফরিদ ও মারুফ মিলে দলের চাহিদা অনুয়ায়ী খেলতে থাকেন। দলীয় ১৯৭ রানের মাথায় লেগ বিফোরের ফাঁদে পরে বিদায় নেন ফরিদ। ৪৯ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। এরপর আর বড় হয়নি বাংলাদেশের ইনিংস।
ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নেন হার্দিক রাজ, যুধাজিত গুহ ও চেতন শর্মা। ১টি করে উইকেট নেন কিরন চরমালি, কার্তিকীয়া ও আয়ুশ মহাত্র।