পাগলা মসজিদ কমিটির অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্ত ও নতুন কমিটি গঠনের দাবি মুসল্লিদের
দেশজুড়ে দানের অন্যতম বড় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। এই মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জমি–সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। এ বিষয়ে তদন্ত করে বর্তমান কমিটি বাতিল ও নতুন, গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
গত ১১ নভেম্বরদেওয়া অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়—দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে থাকা কমিটি নানা ক্ষেত্রে অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। দানবাক্সের বিপুল অঙ্কের অর্থ থেকে শুরু করে মসজিদের সম্পত্তি, উন্নয়ন কাজ, নির্মাণ, ভাড়া—কোনো ক্ষেত্রেই নেই স্বচ্ছতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে অপতথ্য রোধে ইসির সঙ্গে কাজ করবে টিকটক
অভিযোগে যেসব অনিয়ম উঠে এসেছে: দানবাক্সের অর্থ লেনদেনে স্বচ্ছতার অভাব, মুসল্লিদের অভিযোগ—মসজিদের দানবাক্স থেকে সংগৃহীত কোটি কোটি টাকার হিসাব জনগণের সামনে প্রকাশ করা হয় না। ব্যয়ের রেজিস্টার বা আর্থিক রিপোর্ট কোনো সময়ই দেখানো হয় না।
জমি–সম্পত্তি ব্যবস্থাপনায় সাংঘাতিক অনিয়ম:
আরও পড়ুন: আধুনিক দন্ত চিকিৎসায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবন ও প্রয়োগ বিষয়ক আন্তর্জাতিক কংগ্রেস অনুষ্ঠিত
মসজিদের নানা জমি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কাগজপত্র ছাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন। জমির সীমানা নির্ধারণ, ভাড়া, স্থাপনা নির্মাণ—সবই পরিচালিত হচ্ছে অস্পষ্ট ও অনিয়মিত পদ্ধতিতে।
একজন সদস্যের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার অভিযোগ:
অভিযোগে বলা হয়, কমিটির একজন সদস্য সব সিদ্ধান্ত নিজের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। অন্যদের মতামত উপেক্ষা করে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা ধর্মীয় পরিবেশকে উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলছে।
উন্নয়ন কাজে অবহেলা ও স্বজনপ্রীতি:
মসজিদের প্রয়োজনীয় সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণে অনিয়ম এবং নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সুবিধা দিতে বিশেষ ঠিকাদারদের কাজ দেওয়ার অভিযোগও উত্থাপন করা হয়েছে।
মুসল্লিদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি:
কমিটির কর্মকাণ্ডের কারণে এলাকায় বিভক্তি তৈরি হয়েছে এবং পাগলা মসজিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগকারীদের ৬ দফা দাবি:
- বর্তমান কমিটির সব কার্যক্রম তদন্ত করে দ্রুত কমিটি বাতিল করতে হবে।
- সকলের আস্থাযোগ্য, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ পরিচালনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে নতুন কমিটি গঠন।
- দানবাক্সের অর্থ ব্যবস্থাপনা ও ব্যয়ের সম্পূর্ণ অডিট রিপোর্ট প্রকাশ।
- মসজিদের জমি ও সম্পত্তির সঠিক নথি সংরক্ষণ এবং নিয়মমাফিক পরিচালনা।
- স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করে ধর্মীয় পরিবেশ স্বাভাবিক রাখা।
- জেলা প্রশাসনের অধীনে নিয়মিত মনিটরিং ও জবাবদিহি ব্যবস্থা চালু করা।
কমর উদ্দিন, মাহামুদুল্লাহ খান, জসিম উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, বাবুল মিয়া, মিজানুর রহমান (সহকারী শিক্ষক), শহিদুল ইসলাম (মেম্বার), আলমগীর হোসেন, আব্দুল্লাহ মিয়া, আব্দুল জান মামুনসহ মোট ১১ ব্যক্তি লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর করে বিষয়টির দ্রুত সমাধান চান।





