মেঘনা নদীতে রাসেল বাহিনীর চাঁদাবাজি ও বালু উত্তোলনের হিরিক

MIZANUR RAHMAN
মাজহারুল ইসলাম, সোনারগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৮:৫৮ অপরাহ্ন, ১২ অগাস্ট ২০২৩ | আপডেট: ৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৩
বাংলাবাজার পত্রিকা
বাংলাবাজার পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় মেঘনা নদী বেষ্টিত শম্ভুপুরা ইউনিয়নের চর কিশোরগঞ্জ এলাকায় চলছে চাঁদাবাজি ও বালু উত্তোলনের হিরিক। এর নেপথ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওই এলাকার মৃত নাসির উদ্দিন মেম্বারের পুত্র রাসেল মিয়া। নদী পারাপার এলাকায় প্রশাসনের লোকজন পৌঁছাতে বিলম্বতার সুযোগ পুরোপুরি'ই কাজে লাগাচ্ছেন রাসেল বাহিনী।

বালু সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না এলাকাবাসী। এর আগে বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে

চরকিশোরগঞ্জ এলাকাবাসী জানান, সোনারগাঁ উপজেলার একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় প্রায় ১৮ হাজার মানুষের বসবাস। ওই এলাকায় রয়েছে একটি বাজার, দুটি উচ্চ বিদ্যালয়, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুটি মাদরাসা ও মিনি কক্সবাজার নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র। বালু উত্তোলন বন্ধ করে এ প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করা এখন খুবই জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সাবেক ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার ছেলে রাসেল মিয়া চরকিশোরগঞ্জ ও চরহোগলা এলাকায় নদীতে চাঁদাবাজি ও ড্রেজারের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়িত্ব নিয়েছে। রাসেল মিয়ার সঙ্গে রয়েছে ৩০-৩৫ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। তাদের অবৈধ উপার্জনের টাকা স্থানীয় প্রশাসনের অনেকের পকেটেই যায়।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলিতে নিহতের মরদেহ নিয়ে থানা ঘেরাও

সরেজমিনে মেঘনা নদীর চরকিশোরগঞ্জ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদী তীরবর্তী কৃষি জমির পাশে শক্তিশালী ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত ড্রেজারে তেল সরবরাহ করার জন্য সার্বক্ষণিক একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়োজিত রয়েছে। এছাড়া ইঞ্জিনচালিত আরো দুটি নৌকায় ১০-১৫ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সার্বক্ষনিক পাহারায় রয়েছেন। যাতে কেউ বালু উত্তোলনে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।

বালু উত্তোলনে নেতৃত্বে থাকা রাসেল মিয়া জানান, আমরা মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে বালু মহাল ইজারা নিয়ে বৈধভাবেই বালু উত্তোলন করছি। আমরা অবৈধভাবে কোনো বালু উত্তোলন করছি না।

শম্ভুপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে নদীতে বালু উত্তোলনসহ কিছু লোক অনেক অপকর্মই করে থাকেন। বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলার নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক জানান, মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি নৌ-পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি সেখানে অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের আটক করার জন্য। অবৈধ বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।