রংপুর বিভাগে প্রায় ১৩ লাখ চাহিদার বিপরীতে ২১ লাখের বেশী কোরবানির পশু প্রস্তুত

Any Akter
রংপুর সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ন, ০৫ জুন ২০২৪ | আপডেট: ৪:১২ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে রংপুর বিভাগে কোরবানির পশুর চাহিদার চেয়ে প্রায় ৮ লাখেরও বেশী কোরবানির পশু পস্তুত রাখা হয়েছে। এই বিভাগে মোট চাহিদা রয়েছে ১৩ লাখ ১৮ হাজার ১১৭টি। তবে কোরবানির জন্য প্রস্তত রাখা হয়েছে ২১ লাখ ৫২ হাজার ৩১৯টি গবাদি পশু। চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে আরও ৮ লাখের বেশি বলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে। আবার একই সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগের আট জেলার প্রায় ১ লাখ ৭৫হাজার ৩৬২ জন খামারির মাধ্যমে কোরবানির পশু বাজারে আসবে।

রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৫১টি কোরবানির পশুর চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৪২১টি, কুড়িগ্রামে ২ লাখ ১৬ হাজার ৫৩৩টি চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত রয়েছে ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫১টি, নীলফামারীতে ১ লাখ ৪৩ হাজার ১০৯টি চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত ২লাখ ৭৬হাজার ২০১টি, লালমনিরহাটে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৩১টি চাহিদার বিপরীতে রয়েছে ২লাখ ৪০ হাজার ৫০০টি, দিনাজপুরে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৬টি চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত রয়েছে ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৩০টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৯১হাজার ৭৯৫টি চাহিদার বিপরিতে বিভিন্ন খামারে কোরবানি যোগ্য পশু রয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৫৬০টি, পঞ্চগড়ে ১লাখ ২২ হাজার ৭৮টি চাহিদার বিপরীতে প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার ৩৭১টি কোরবাণীর পশু। এদিকে রংপুর জেলায় ২ লাখ ২০ হাজার ৩৪৪টি চাহিদার বিপরীতে বিভিন্ন খামারে কোরবানির পশু প্রস্তত রয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৮৫টি।

আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার গবাদি পশুর খামারী নুরুল ইসলাম জানান, গো-খাদ্যের দাম প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। ঈদ উপলক্ষে দুটি গরু বিক্রি করবে। ইতোমধ্যে বাড়িতে কয়েকজন এসে দর কষাকষি করলেও। লাভ না হওয়ায় এখনো বিক্রি করা হয়নি।

পীরগাছা উপজেলার প্রতিপাল বগুড়া পাড়া গ্রামের আল-আমিনের কয়েকটি ফ্রিজিয়ান জাতের গবাদি পশু কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বর্তমানে পশু খাদ্যের দাম, শ্রমিকের খরচসহ অন্যান্য খরচের কারণে খামার করে লাভবান হওয়াটা কষ্টকর বলে জানান তারা।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে উৎপাদনশীল করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে: ড. মঈন খান

এদিকে প্রতি বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক খামারে গবাদি প্রাণী মোটাতাজাকরণ করা হয়। পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়েও চরাঞ্চলে গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। তবে ঈদের আগে বন্যার আশঙ্কা না থাকায় কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট জেলার চর এলাকার খামারিরা চিন্তামুক্ত। খাবার ও পশু রাখার স্থানের অভাবে কম দামে বিক্রির তাগিদ অনুভব করছেন না প্রান্তিক খামারিরা।

রংপুর ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি লতিফুর রহমান মিলন জানান, পশু খাদ্যসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়া অব্যাহত থাকায় রংপুর বিভাগের অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক খামার বন্ধের পথে। যারা আছেন তাদের অনেক সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তাই এবার গরুর দাম তুলনামূলক বেশী হবে।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ এনামূল হক জানান রংপুর জেলার ৮উপজেলায় চাহিদার বিপরীতে বিভিন্ন খামারে ১ লাখের বেশী গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে।

বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডক্টর নজরুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদে চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত পশু থাকবে আট লাখেরও বেশি। ঈদে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ থেকে সাধারণত উদ্বৃত্ত প্রাণী বিভিন্ন স্থানে যায়। এর মধ্যে রংপুর অন্যতম। হাটগুলোয় যাতে অসু¯্য’ গবাদি পশু বিক্রি করতে না পারে, সেজন্য বিভাগের বিভিন্ন হাটে মেডিকেল টিম কাজ করছে। পাশাপাশি হাটে আসা কোনো গবাদি পশু অসুস্থ হলে মেডিকেল টিম চিকিৎসা দেবে।