অবৈধ বালু উত্তোলনে বাধা

এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্যে প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ

Sanchoy Biswas
মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৮:০৫ অপরাহ্ন, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৮ অপরাহ্ন, ০৬ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে গ্রাম ঘেঁষে বালু উত্তোলন করার সময় বাধা দেওয়ায় এলাকাবাসীকে লক্ষ্য করে দুই দফায় প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলিবর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় জীবন বাঁচাতে নৌকা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আহত হয়েছে একজন। একটি ড্রেজার আটক করেছে এলাকাবাসী। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১১ টার দিকে উপজেলার ষোনআনী বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন মেঘনা নদীর পাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তির নাম পলাশ (৩৫। সে গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক যুব দিবস পালিত

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত পলাশ বলেন, ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে একটি বৈধ বালুমহাল থাকলেও সন্ধ্যা হলেই তারা ড্রেজার নিয়ে নদীর তীরে চলে আসে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে শতবিঘা জমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে বারোটার দিকে কয়েকটি ড্রেজার নিয়ে ষোলআনী বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছিল তারা। একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী মান্নান, লালু, সৈকত, বাবু, আমজাদসহ কয়েকজন মহড়া দিচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাঁদের বাধা দিতে গেলে তারা এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। তারা প্রায় ১৭ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। 

তিনি আরও বলেন, গুলি থেকে বাঁচতে আমি নৌকা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আহত হই। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন সন্ত্রাসীদের অবরুদ্ধ করে ফেললে সন্ত্রাসীদের আরেকটি দল ট্রলার নিয়ে এসে এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে ৩০-৩৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে অবরুদ্ধ সন্ত্রাসীদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ সময় উত্তেজিত জনতা (আনাস বিন জুবায়ের ড্রেজিং প্রকল্পে) নামে একটি ড্রেজার আটক করে।

আরও পড়ুন: সাভারে পাচারকালে পিকআপসহ সাড়ে ৬ লাখ টাকার টিসিবি’র পণ্য জব্দ, আটক-১


আরেক প্রত্যক্ষদর্শী কাউসার হোসেন বলেন, প্রথম দফা গুলিবর্ষণের পর স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে নদীর পাড়ে জড়ো করা হয়। স্থানীয় লোকজন সন্ত্রাসীদের একটি ড্রেজার অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলেও তাদের সেরকম তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরে ইঞ্জিন চালিত আরেকটি ট্রলারে একদল সন্ত্রাসী এসে ফিল্মি স্টাইলে গুলি করতে করতে অবরুদ্ধ সন্ত্রাসীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ উথান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নদীর এ এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। আজকে ফিল্মি স্টাইলে এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে প্রায় অর্ধশত রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে তারা। আমি যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি'।

বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে গুলিবর্ষণ করার ঘটনার সত্যতা পেয়েছি আমরা। বেশ কয়েকজন আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। বিষয়টি আমি নৌ-পুলিশকে জানিয়েছি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গজরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলমের সরকারি নম্বরে একাধিক বার কল করা হলেও, তিনি রিসিভ করেনি।

বিষয়টি সম্পর্কে নৌ-পুলিশ নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, আপনারা প্রথম আমাকে জানালেন। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।