কক্সবাজারে চিকিৎসা সেবায় সেন্ডিকেট বানিজ্য, সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেই বলে চলে!

পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়ে জনমত জরিপ করতে গিয়ে বেশির ভাগ মানুষের দাবী বর্তমানে ক্লিনিক ব্যবসায়িদের নিয়ন্ত্রনে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। সরকার স্বাস্থ্য খাতে বিশাল অর্থ খরচ করলেও তার সুফল পাচ্ছে না জেলার সাধারণ মানুষ। এখনো মানুষকে বেসরকারী হাসপাতালের উপর বেশি নির্ভর করতে হয়। কক্সবাজারের সদর হাসপাতালসহ উপজেলা পর্যায়ের সরকারী হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসা সেবা নেই বলছেন ভোক্তভোগীরা। যার কারণে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এখানকার কোটি কোটি মানুষ। জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে জনমত জরিপ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের মন্তব্যে উঠে এসেছে বেশ কিছু অভিযোগ ও পরামর্শ।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির অজুহাতে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ, লাপাত্তা ঠিকাদার
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা সুজন সভাপতি অধ্যাপক অজিত দাশ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি হোসাইনুল ইসলাম মাতবর আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক এড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, পরিবহণ শ্রমিক নেতা রাশেদুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, কক্সবাজারের মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল জেলা সদর হাসপাতালের অবস্থা খুবই করুণ। এখানে চরম অব্যবস্থাপনার কারনে মানুষ পারদ পক্ষে জেলা সদর হাসপাতাল মুখি হতে চায় না। আর্থিক কারনে অনেকে সেখানে গেলেও কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, সহ সেবা নিয়ে মানুষ চরম অসন্তুষ্ট। আবার অনিয়ম দুর্নীতি করে বিগত দিনে অনেকে কোটিপতি বনে গেছে সেটা সবার জানা। তার বিপরীতে কক্সবাজারে বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবা গুটি কয়েক ক্লিনিক ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি, জেলার বেশির ভাগ সেবাদান কারী প্রতিষ্টান গুলো সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: আসামির স্থলে ছবি প্রকাশে ছাত্রদল নেতার সংবাদ সম্মেলন
আরও বলেন, তাদের প্রথম এবং একমাত্র উদ্দ্যেশ্য থাকে কিভাবে রোগিদের জিম্মি করে টাকা আয় করা যায়। এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ হচ্ছে বেসরকারী হাসপাতালে একটি নীতিমালা করা দরকার। সরকার চাইলে সেটা করতে পারে। সেখানে হাসপাতালের সাথে সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ে অভিজ্ঞতা, কোন সেবা কত টাকার মধ্যে দিতে হবে। কারা এর সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। মানুষ কিভাবে উপকৃত হবে। বিশেষ করে কনসালটেন্ট ডাক্তাররা দৈনিক কতঘন্টা সরকারি হাসপাতালে থাকবে, বাইরের চেম্বারে দৈনিক কতজন রোগি দেখতে কি পরিমান ফি নিতে পারবে। অপারেশন ভেদে কি পরিমান টাকা নিবে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মের মধ্যে থাকা উচিত। যদিও অনেক ক্ষেত্রে আইন আছে তবে রাজনৈতিক প্রভাবে কোন আইন কানুন মানতে চাইনা। এ ব্যাপারে এড, সওকত বেলালসহ অনেকে বলেন, রামু, উখিয়া, টেকনাফ চকরিয়াসহ উপজেলায় যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে সেখানে সব দিকে চরম নৈরাজ্য এবং অব্যবস্থাপনা। কেউ কিছু বললে শুধু রোগি বেশি এই অযুহাতই যথেষ্ট। ওইসব উপজেলায় একাধিক বেসরকারী হাসপাতাল আছে মূলত সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে বেসরকারী হাসপাতালে ছুড়ে যাচ্ছে সেখানেও রোগিদের অসহায়ত্বকে জিম্মি করে বানিজ্য করছে। সব বেসরকারী হাসপাতাল কিছু ব্যবসায়ি এবং রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে চলে। তাদের একমাত্র উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে টাকা কামানো। সেবার নামে মানুষকে দেওলিয়া করে নিজেরা এখন কোটিপতি। স্বাস্থ্য সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও বাস্তবতা হচ্ছে সেই মৌলিক অধিকার পেতে মানুষকে নিঃস্ব হতে হচ্ছে। এখানে আরো দুঃখ জনক হচ্ছে যারা বেসরকারি হাসপাতাল গুলোর অনিয়ম দূর্নীতি ধরবে তারাই হাসপাতালের শেয়ার হোল্ডার, আবার অনেকে পরিচালক তাহলে কারা কি করবে?
ঈদগাহর বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধি জিয়াবুল হক বলেন, ঈদগাওতে বেসরকারী হাসপাতালের মধ্যে ঈদগাও তে বহু বেসরকারী হাসপাতাল আছে। যদিও এসব হাসপাতালের মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে যাচ্ছে তারা হয়রাি নর শিকার হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ঘরের গরু ছাগল বিক্রি করে হাসপাতালে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। আর প্রত্যেকটা হাসপাতাল গুলো ব্যবসায়িদের নিয়ন্ত্রণে। একটি বড় মাফিয়া বা সিন্ডিকেটের কাছে সব কিছু জিম্মি। উখিয়ার সমাজ সেবক ও জনপ্রতিনিধি, গফুর উদ্দিন চেয়ারম্যান বলেন, উখিয়াতে বেসরকারী বেশ কিছু বেসরকারী হাসপাতাল আছে। অবশ্যই সব বেসরকারি হাসপাতাল কিছু ব্যবসায়ি এবং সিন্ডিকেট দ্বারা পরিচালিত। এখানে সরকারি উপজেলা হাসপাতাল থাকলে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পেতে ভোগান্তির শেষ নেই। কিছুটা জটিল রোগ হলেও জেলা সদর বা ঢাকা চট্টগ্রামে দৌড়াতে হয়। সেখানেও টাকা খরচ করতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় স্থানীয় মানুষ। এবিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত টিমের অভিযানসহ কার্যকর পদক্ষেপ দাবী করেন সচেতন মহল।