বৃষ্টির অজুহাতে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ, লাপাত্তা ঠিকাদার

গত তিন বছর ধরে ৮৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে চলে আসছে ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়কের নির্মাণ কাজ। রূপগঞ্জ সদর থেকে পূর্বাচল ৩শ ফুট সংযোগ সড়ক দু’টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি মুশুরী থেকে পূর্বাচলের ২নং সেক্টর দিয়ে ৩শ ফুট সড়কের জলসিড়ি চত্ত্বর অপরটি মুশুরী থেকে ভক্তবাড়ি বাজার হয়ে ব্রাহ্মণখালী এলাকায় পূর্বাচল নতুন শহরের ৩নং সেক্টরে মিলিত হয়েছে।
বরাদ্দ অর্থে এ সড়কের মুশুরী, ভিংরাবো আর উত্তর ব্রাহ্মণখালী এলাকায় ৩টি খালের ওপর ৩টি সেতু নির্মাণ করার কথা। সেই সুবাধে গত বছরের শীতে পুরনো সেতু ভেঙ্গে দিয়েছে এলজিইডির নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কোম্পানী এনডিই। সময়মতো ওই সেতু তিনটি হলে ভোগান্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু সেতু ভেঙ্গে বিকল্প সড়ক না করেই ঠিকাদার লাপাত্তার ঘটনায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন রূপগঞ্জের প্রায় তিন লাখ বাসিন্দা। যারা এ সড়কে চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন প্রায় বিগত ৮ বছর ধরে৷
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে ২০০ বছরের পুরোনো কাইকারটেক হাট
উত্তর ব্রাহ্মণখালীর বাসিন্দা লুৎফর রহমান বলেন, পূর্বাচলের কাঞ্চন ব্রিজের সংযোগ থেকে রূপগঞ্জ উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়া, থানা পুলিশের কাছ থেকে আইনি সেবা নেয়া, সাবরেজিস্টার অফিস থেকে দলিল সম্পাদন,ডাক বিভাগের সেবা নিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের। গত ৮ বছর এ সড়কটি খানাখন্দে থাকলে গত ২ বছর পূর্বে ৮৫ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরু হয়। কিন্তু সময় মতো সড়কের কাজ করার একদিকে ভোগান্তি পোহাচ্ছিলো। এখন এ সড়কের কাজ প্রায় শেষ। দুএকটি স্থানে আংশিক বাকি। কিন্তু ৩টি খালে ৩টি সেতু নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে আর বিকল্প সড়ক পাকাপোক্ত না করায় ভোগান্তি বেড়েছে। এর দায় ঠিকাদার ও উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলীদের নিতে হবে।
একই এলাকার বাসিন্দা শরীফ মিয়া বলেন, প্রাচীন একটি খালের ওপর সেতু ছিলো সরু, ফলে প্রশস্ততা বাড়ানোর জন্যে তা ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার আর উপজেলা প্রকৌশলীদের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকায় তার কাজ ফেলে রেখেছে। বিকল্প সড়ক না করায় এলাকার বাসিন্দা ও রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু সাহেবের অর্থায়নে চলাচল উপযোগী করা হয়। পরবর্তীতে বৃষ্টির কারণে তাও ঝুঁকিতে পড়ে যায়।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে গাঁজা ও ইয়ার গানসহ যুবক আটক
রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, থানা থেকে আইনি সেবা নিতে আসা লোকজন সড়ক নিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। আমরাও ৯৯৯ এর কল পেয়ে দ্রুত যেতে পারি না। এ সড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিমানবন্দর থেকে যাত্রী ও যানবাহনের যাতায়াতের কারণে সব সময় যানজট তৈরি হয়। আবার থানার সামনে পানি জমে থাকায় অটোরিকশা, সিএনজি উল্টে আহতের ঘটনা ঘটছে। তাই দ্রুত এ সড়ক ও সেতুর কাজ শেষ করা জরুরি।
রূপগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী শফিউল আলম শ্যামল বলেন, আমরা দায়িত্ব পালন করছি। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। আমাদের গাফিলতি নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আখতার হোসেন বলেন, সড়কটির কাজ থানা ভবন এলাকায় জমির সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা ও বিদ্যুৎ খুঁটি সরানো প্রক্রিয়ার কারণে দেরি হচ্ছে। আর সেতু তিনটির বিকল্প সড়ক করতে জমি সংকট, পানি প্রবাহ বন্ধ করলে স্থানীয়দের জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়াসহ নানা কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টি কমলে কাজ শুরু হবে। এখানে এলজিইডির কোন গাফিলতি নেই।