সিলেট-৬ গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার
বাবা লেচু মিয়ার জনপ্রিয়তা ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন সৈয়দা আদিবা হোসেন

সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ–বিয়ানীবাজার) আসন ঘিরে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক উত্তাপ। মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ভোটারদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী, সাবেক এমপি মরহুম ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন (লেচু মিয়া)-এর কন্যা তরুণ, শিক্ষিত ও প্রগতিশীল নারী সৈয়দা আদিবা হোসেন। বাবার জনপ্রিয়তা ও নিজস্ব রাজনৈতিক কর্মতৎপরতায় তিনি হয়ে উঠছেন এ জনপদের ‘নারী নেতৃত্বের নতুন সম্ভাবনা’ এবং বিএনপির মাঠে নারীর নতুন কণ্ঠ।
রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের নারীর কণ্ঠস্বর হিসেবে সিলেট-৬ আসনে উঠে আসছেন সৈয়দা আদিবা হোসেন। গোলাপগঞ্জ–বিয়ানীবাজারের প্রতিটি গ্রাম, হাট ও উঠানে ছড়িয়ে দিচ্ছেন উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বার্তা।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে ২০০ বছরের পুরোনো কাইকারটেক হাট
সৈয়দা আদিবা হোসেনের পরিচয় শুধু বিএনপি নেত্রী নয়, তিনি সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য এবং সিলেট-৬-এর কিংবদন্তি নেতা মরহুম লেচু মিয়ার সুযোগ্য কন্যা। রাজনীতিতে তার প্রবেশ কেবল পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে নয়, বরং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার থেকে।
ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন ছিলেন সিলেট-৬ আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট রাজনীতিক ও শিল্পপতি। এলাকায় তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের স্মৃতি আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে। সেই ঐতিহ্যের উত্তরসূরি হিসেবে মঞ্চে এসেছেন কন্যা সৈয়দা আদিবা, তবে শুধু বাবার নামের জোরেই নয়—নিজের গতিশীলতা, স্পষ্ট রাজনৈতিক দর্শন এবং মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পৃক্ততার মাধ্যমে তিনি তৈরি করছেন নিজস্ব পরিচিতি।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে গাঁজা ও ইয়ার গানসহ যুবক আটক
প্রায় প্রতিদিনই দেখা যায়, তিনি কখনো গ্রামের উঠান বৈঠকে, কখনো স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে, আবার কখনো বাজারে সাধারণ মানুষের খোঁজখবর নিচ্ছেন। বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি তিনি নিজস্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরছেন—যার মধ্যে রয়েছে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা, তরুণদের কর্মসংস্থান, নারী ক্ষমতায়ন, এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তার সভা ও বৈঠকগুলো জমে উঠছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রাবেয়া বেগম বলেন— ‘একজন নারী হিসেবে আদিবা আপা আমাদের সাহস জোগাচ্ছেন। আমরা চাই তিনি এগিয়ে যান এবং নারীদের জন্য কাজ করুন।’ প্রবীণ ভোটার আসাদ উদ্দিনের ভাষায় ‘তিনি সৎ, শিক্ষিত ও পরিশ্রমী। এমন নেতৃত্ব পেলে আমাদের এলাকার অনেক উপকার হবে।’
গত ১৭ জুলাই লন্ডনের কিংস্টনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সৈয়দা আদিবা হোসেন। এই সাক্ষাৎ গোলাপগঞ্জ–বিয়ানীবাজারের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাক্ষাৎকালে তিনি সিলেট-৬ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তারেক রহমান তাকে জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বজায় রাখা, এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখা এবং দলের রাজনীতিকে আরও গতিশীল করার দিকনির্দেশনা দেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ নেতৃত্বের এই দিকনির্দেশনা তার এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার মনোবল ও উৎসাহ বহুলাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে।
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখানে বলেন, ‘আমার অঙ্গীকার উন্নয়ন, ন্যায়বিচার এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। প্রতিহিংসার রাজনীতি নয়, চাই রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্প্রীতি—যেখানে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত হবে।’
একজন নারী হিসেবে তিনি বিশেষ করে নারীদের জন্য কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও নেতৃত্বের সুযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। স্থানীয় নারী ভোটাররা বলছেন, তার উপস্থিতি তাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সাহস জোগাচ্ছে।
গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে তার পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠিত পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শিক্ষার মান উন্নয়ন, অবকাঠামো আধুনিকায়ন, তরুণদের উদ্যোক্তা তৈরির সুযোগ সৃষ্টি এবং এলাকার প্রবাসী কমিউনিটির সঙ্গে আরও শক্তিশালী যোগাযোগ তৈরি করবেন।
সিলেট-৬-এর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন— ‘নারী নেতৃত্বের উত্থান বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন বার্তা। সৈয়দা আদিবা হোসেন সেই নতুন বার্তার প্রতীক। তিনি শুধু বাবার উত্তরাধিকার বহন করছেন না, বরং নিজস্ব দক্ষতায় ও প্রগতিশীল চিন্তায় তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করছেন।’
দুই উপজেলার ভোটারদের মধ্যে এখন প্রশ্ন— ‘গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের নতুন দিন কি আসছে সৈয়দা আদিবা হোসেনের হাত ধরে?’