ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাতক্ষীরার কামাররা

সাতক্ষীরার কামাররা ঈদুল আযহা সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন, দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম ঈদুল আযহা।
আর মাত্র কিছুদিন পরেই কুরবানির ঈদ। এই ঈদের অন্যতম কাজ হচ্ছে পশু কুরবানি করা। ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাতক্ষীরা কামার শিল্পের কারিগররা।
আরও পড়ুন: নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করছেন সব ধারালো সামগ্রী। তবে এসব তৈরিতে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি। পুরানো সেকালের নিয়মেই চলছে আগুনে পুড়ে লোহা হতে ধারালো সামগ্রী তৈরির কাজ। মুসলিম ধর্মের
অনুসারীরা আল্লাহকে রাজি করতে পশু জবাই করে থাকে। এই পশু জবাইয়ের জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জামাদি।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে নির্যাতিত শিশুর পাশে তারেক রহমান
মাংস কাটা ও কুরবানির পশু জবাই করার বিভিন্ন ধাপে ছুরি, দা, চাপাতি এসব ব্যবহার করা হয়। তাই পশু কুরবানিকে কেন্দ্র করে কামার শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছে। দগদগে আগুনে গরম লোহা পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে সাতক্ষীরা জেলার কামার পল্লীগুলো। প্রস্তুত করছেন জবাই সামগ্রী।
ঈদে শত শত গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ ইত্যাদি পশু কুরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চুড়ান্ত প্রস্তুত পর্যন্ত দা বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার আবশ্যকীয় হয়ে যায়। ঈদের আগেই পশু জবাই করার ছুরি, চামড়া ছাড়ানোর ছুরি, চাপাতি, প্লস্টিক ম্যাট, চাটাই, গাছের গুঁড়িসহ সবকিছু প্রস্তুত রাখতে হয়। মঙ্গলবার(২৭ মে) বিভিন্ন কামারের দোকান পরর্দিশন করে দেখা যায় সাতক্ষীরা সাত উপজেলায় বিভিন্ন কামার শিল্পীদের প্রতিষ্ঠান রয়েছে , প্রায় সবাই এখন কাজে ব্যস্ত। সাতক্ষীরা তালাও উপজেলার ঘোনা গ্রামের ভোলা কর্মকার ও আশুতোষ কর্মকার জানান, এসব ধারালো সামগ্রী মধ্যে ওজন ও প্রকারভেদে দাম
নির্ধারণ হয়ে থাকে। দা প্রতিটি ৪ শত থেকে ৫ শত টাকা বিক্রয় করছেন।
ছুরি আকার ভেদে ১০০- ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। জেলার বিভিন্ন অন্যান্য হাটবাজারেও কামার কারিগরদের উৎপাদিত দা ছুরি বিক্রি করা হয়।
আরো জানান, এ পেশায় অধিক শ্রম দিতে হয়। জীবিকা নির্বাহে কষ্ট হলেও শুধু বাপ দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ পেশাটিকে তারা এখনও আঁকড়ে ধরে আছেন।
বিভিন্ন সময় এসবের চাহিদা কম থাকলেও কুরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সকলেই এখন ছুটছেন কামারদের কাছে। আর এতেই এক মাসে পেশাটি জমজমাট হয়ে উঠেছে। তবে এসব সামগ্রী তৈরির উপকরণ কয়লা ও লোহার দাম
বেশি হওয়ায় লাভের পরিমাণ কমে গেছে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন স্থানে মৌসুমী কামারের দেখা মিলছে। তারা এলাকার বন্ধ দোকান ঘর এক মাসের জন্য ভাড়া করে অথবা খোলা জায়গায় বসে দা, ছুরি, চাকু তৈরি, শান ও মেরামত করতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করলেও ঈদের পরে আর তাদের দেখা মিলে না। পাটকেলঘাটা বাজারের বিশ্ব কামার কর্মকার জানান, কুরবানির পশু জবেহ করা, মাংস কাটা, ও চামড়া ছিলানোর জন্য ধারাল ছুরির প্রয়োজন। ঘরে থাকা দা, বঁটি, ছুরিতে মরিচা থাকায় শানয়ের জন্য নিয়ে এসেছি।