৩ হাজারের বেশি কবর খোঁড়া মনু মিয়া মারা গেছেন

Sadek Ali
এম.এ. কিবরিয়া, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৪:০৩ অপরাহ্ন, ২৮ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১০:০৫ পূর্বাহ্ন, ২৮ জুন ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, তিন হাজার মানুষের শেষ বিদায়ের নিঃস্বার্থ সাথী, ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে খ্যাত মো. মনু মিয়া (৬৭) মারা গেছন।

শনিবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: সাদা পাথর রক্ষায় প্রশাসনের ৫ দফা সিদ্ধান্ত

স্থানীয়রা জানান, দূর-দূরান্ত থেকে মৃত্যুর খবর এলেই ছুটে যেতেন তিনি। শীত-গ্রীষ্ম-বৃষ্টি কোনো কিছুই থামাতে পারেনি তাকে। যাতায়াতের সুবিধার জন্য নিজের ধানিজমি বিক্রি করে কিনেছিলেন একটি ঘোড়া, যাতে করে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে দ্রুত মৃতের বাড়িতে পৌঁছাতে পারেন। বহুবার দেখা গেছে, কোনো নাম না জেনেই, শুধু মৃত্যুর খবর শুনেই কাজ শুরু করে দিতেন মনু মিয়া।

জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।

আরও পড়ুন: ‎পাবনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার

মনু মিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জীবনের প্রায় অর্ধশত বছর তিনি ব্যয় করেছেন কবর খননের মহান কাজে, বিনিময়ে কখনো কিছু চাননি। আশপাশের গ্রাম ও জেলাজুড়েও পরিচিত ছিলেন শেষ ঠিকানার কারিগর নামে।

প্রায় ৪৯ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে তিনি কবর খুঁড়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষের। একটি ঘোড়ার পিঠে চড়ে তিনি ছুটে যেতেন মৃতের বাড়িতে৷ এই কাজের জন্যই তিনি একসময় দোকান বিক্রি করে কিনেছিলেন প্রিয় ঘোড়াটি।

এদিকে মনু মিয়ার মৃত্যুতে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন, জনপ্রতিনিধি ও ধর্মীয় মহল শোক প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, মনু মিয়ার মতো নিঃস্বার্থ সমাজসেবক আজকাল খুঁজে পাওয়া কঠিন।