কর পরিশোধে নাগরিকদের সহযোগিতা না পেলে সেবা ব্যাহত হবে: লালমনিরহাট পৌর প্রশাসক

Sadek Ali
আবু বক্কর সিদ্দিক, লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১১:০০ পূর্বাহ্ন, ১২ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১:০১ পূর্বাহ্ন, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

লালমনিরহাট পৌরসভায় নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখতে এবং উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পৌর কর, পানির বিলসহ সকল বকেয়া পরিশোধে পৌরবাসীর প্রতি আন্তরিক আহ্বান জানিয়েছেন পৌর প্রশাসক মোঃ রাজীব আহসান।

সম্প্রতি পৌরসভায় এক সভায় তিনি বলেন, “সরকার থেকে নির্দিষ্ট বেতন, বোনাস বা উন্নয়ন বাজেট না পাওয়ায় পৌরসভার দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে নিজস্ব আয়ের উপর নির্ভর করে। এ অবস্থায় নাগরিকদের কর প্রদানের সহযোগিতা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী সেবা নিশ্চিত করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য।”

আরও পড়ুন: চাঁদাবাজি নয়, নেপথ্যে নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণ কাহিনী

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের সামনে দুটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে—একদিকে নাগরিকদের ক্রমবর্ধমান সেবা চাহিদা, অন্যদিকে পৌরসভার সীমিত রাজস্ব। তারপরও আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, নাগরিকদের পাশে থেকে অন্তত ন্যূনতম সেবা নিশ্চিত করার। কিন্তু এর জন্য এখনই সময়, সবাইকে কর সময়মতো পরিশোধ করে পৌরসভার পাশে দাঁড়ানোর।”

সভায় প্রকৌশল বিভাগের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আইয়ুব আলী। তিনি বলেন, “রাস্তাঘাট, ড্রেন, স্ট্রিট লাইট, পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো সংস্কারে নিয়মিত কাজ করার পরিকল্পনা থাকলেও বাজেট সংকট বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর পরিশোধে নাগরিকদের উদাসীনতা অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। অথচ একজন করদাতা নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্স দিলে সেই অর্থ দিয়েই তার এলাকার উন্নয়ন সম্ভব।”

আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে দেড় ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

অর্থ ও হিসাব শাখার পক্ষ থেকে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী জানান, “পৌরসভার বার্ষিক আয় খুবই সীমিত, কিন্তু ব্যয় তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। শতভাগ ব্যয় চলে যায় কর্মীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল, পানি সরবরাহ ও মৌলিক সেবায়। অনেক নাগরিক ৫-৭ বছর ধরে কোনো কর বা পানির বিল দেননি, তবুও সেবা অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থায় পৌরসভা চালানো এবং উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নেওয়া প্রায় অসম্ভব।”

পৌরস সূত্রে জানা গেছে, এখন থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কর প্রদানে সচেতনতা বাড়ানো হবে। বকেয়া করদাতাদের চিহ্নিত করে নোটিশ প্রেরণ এবং প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, নাগরিক সুবিধা উপভোগ করতে হলে কর দেওয়া কেবল আইনগত বাধ্যবাধকতাই নয়, বরং এটি নৈতিক দায়িত্বও। নিয়মিত কর পরিশোধের মাধ্যমে শহরের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং পৌর কর্তৃপক্ষ নাগরিক সেবা আরও সহজে নিশ্চিত করতে পারবে।

সেবা নিতে চাইলে পাশে থাকুন এই বার্তাই এখন পৌর প্রশাসনের প্রত্যাশা সচেতন, দায়িত্ববান ও করপরায়ণ নাগরিকদের কাছে