মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান শুরু

হাদী হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্টদের ব্যাংকে ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন

Sanchoy Biswas
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৮:২০ অপরাহ্ন, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:০০ অপরাহ্ন, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান বিন হাদী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসা ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাব লেনদেন বিশ্লেষণে ১২৭ কোটি টাকার অধিক অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে প্রাথমিকভাবে সিআইডি এই অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পাওয়ায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী অর্থ পাচার সংক্রান্ত অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে।

গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে ওসমান হাদী মাথায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার অব্যবহিত পরেই সিআইডি এ ঘটনার নানাদিক নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থলে দ্রুততম সময়ে ক্রাইমসিন ইউনিটের উপস্থিতি, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ এবং ঘটনাস্থল থেকে ঘাতকের ব্যবহৃত গুলির খোসা উদ্ধার ও পরবর্তীতে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন আলামত ফরেনসিক পরীক্ষাসহ এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের নানাদিক নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে সিআইডি। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত ব্যাংক হিসাবের তথ্য নিয়ে মানিলন্ডারিং অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করলো সিআইডি।

আরও পড়ুন: হাদির হত্যাকারী ফয়সাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই: অতিরিক্ত আইজিপি

ওসমান হাদী হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান ওরফে রাহুল এখনো গ্রেফতার না হলেও মামলার আলামত গোপন ও অভিযুক্তকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে তার পরিবারের সদস্যসহ একাধিক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

গ্রেফতার অভিযানের সময় প্রাপ্ত বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবইয়ের তথ্য সিআইডি গুরুত্ব নিয়ে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ শুরু করে। এতে দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বেশ কিছু চেক বইয়ে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থের কথা উল্লেখ রয়েছে। চূড়ান্ত লেনদেন সম্পন্ন না হওয়া এসমস্ত রেকর্ডের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন: হাইকমিশনে হামলা নিয়ে দিল্লির বিবৃতি প্রত্যাখ্যান ঢাকার

তবে সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, অভিযুক্ত ও তার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেন সংঘটিত হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংক্রান্ত অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে। বিষয়টি আমলে নিয়ে সিআইডি মানিলন্ডারিং বিষয়ে পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে। মূল অভিযুক্ত ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে দ্রুততম সময়ে বাজেয়াপ্ত করার জন্য যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সিআইডি। পাশাপাশি এই সকল অর্থের মূল সরবরাহকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করার জন্য সিআইডির অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে পরিকল্পনা, অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে কোনো সংঘবদ্ধ ও শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল কি না সে বিষয়েও সিআইডির একাধিক টিম কাজ করছে।

অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি মূলহোতাকে গ্রেফতার এবং পুরো অপরাধচক্র উন্মোচনে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।