কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে জামায়াত প্রার্থী প্রফেসর কর্নেল (অব:) জেহাদ খানের পরিকল্পনা

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:১১ অপরাহ্ন, ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | আপডেট: ৩:০৭ অপরাহ্ন, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রফেসর কর্ণেল (অব:) ডা: জেহাদ খান একজন বাংলাদেশের খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।

তিনি ১৯৫৭ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নে ক্বারী সাহেব বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার নানা মৌলভী সাইদুর রহমান যুক্তফ্রন্টের এমএলএ ছিলেন। তার খালা হাফেজা আছমা খাতুন ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন। তার মামা মরহুম লেঃ কর্নেল মাহফুজুর রহমান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একান্ত সচিব ছিলেন। তার বড় ভাই অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ নৌশাদ খান; যিনি চিকিৎসা, শিক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এলাকায় অনেক অবদান রেখে চলেছেন।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে ফেরাতে ছদ্মবেশে ইউএনওর অভিযান

তিনি শিক্ষাজীবন শুরু করেন কিশোরগঞ্জ আল জামিয়া ইমদাদিয়ায়। অত্র মাদ্রাসায় তিনি পাঁচ বছর লেখা-পড়া করেন। ১৯৭৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ২১তম স্থান অধিকার করেন এবং রায়মহাশয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত হন। ১৯৮৬ সালে তাজিকিস্তান থেকে কৃতিত্বের সাথে ডাক্তারী পাশ করেন। তিনি দীর্ঘ ২৬ বছর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এড. আবদুল হামিদ সাহেবের নিকটাত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও ব্রিগেডিয়ার র‍্যাংক না নিয়ে তিনি ২০১৪ সালে স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

বর্তমানে তিনি ইবনে সিনা কার্ডিয়াক সেন্টারের সিনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। সারাদেশের মানুষকে কম খরচে তিনি হৃদরোগের চিকিৎসা দিয়ে চলেছেন। তিনি ইবনে সিনা ট্রাষ্টের বোর্ড মেম্বার এবং ফার্মাসিউটিক্যালের ডাইরেক্টর। তিনি মানারাত ইউনিভার্সিটি, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা এবং মানারাত স্কুল ও কলেজের গভর্নিং বডির মেম্বার। তাছাড়া তিনি কয়েকটি সমাজ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। তিনি বিশ্বের ২৫টির অধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং বিভিন্ন সিম্পোজিয়াম, সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন। সম্প্রতি তিনি ‘রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের (রাওয়া)’ নির্বাহী কমিটিতে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দেশের সমসাময়িক সমস্যা নিয়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করেন। তার লেখা বই ‘জীনের আছর, ধর্ম ও বিজ্ঞানের আলোকে’ ‘স্বাস্থ সুরক্ষা ও ইসলাম’ পাঠক মনে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছে।

আরও পড়ুন: সিংড়ায় হাঁসের খামারে হামলা ও লুট, ৮০০ শত হাঁস নিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা

প্রফেসর কর্ণেল (অব:) ডা:জেহাদ খান ছাত্রজীবনে আরবদেশের সহপাঠীদের কাছ থেকে তিনি ইসলামী রাজনীতির সাথে পরিচিত হন। ১৯৮৭ সালে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় সবরকম রাজনৈতিক কর্মকান্ড থেকে তিনি বিরত থাকেন (বাহিনীর নিয়মনুযায়ী)। অবসর গ্রহণের পর তিনি আবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি এই দলের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য।

অবসর গ্রহণের পর গত ১০-১১ বছর ধরে তিনি অনেক ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করেছেন যার সংখ্যা তিনি সম্প্রতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এলাকার মেডিকেল কলেজে দীর্ঘদিন তিনি অবৈতনিক প্রফেসরের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি অত্র কলেজের উপাধ্যক্ষ (অবৈতনিক)। মেডিকেল ক্যাম্পে শনাক্ত জটিল রোগীদেরকে কিশোরগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে স্বল্পমূল্যে বা বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। তার উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ ষ্টেশন রোডে স্বাস্থ্য সেবায় পথপ্রদর্শক ইবনে সিনা অচিরেই চালু হতে যাচ্ছে। কিশোরগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নতুন কমিটি গঠনে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। সম্প্রতি তিনি আকিজ গ্রুপের সৌজন্যে বিনা মূল্যে ৭৫টি ছানী অপারেশনের ব্যবস্থা করেছেন।

করিমগঞ্জ-তাড়াইল এলাকার জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হিসেবে তিনি দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকাকে একান্ত আলাপ চারিতায় জানান,এলাকার কোন রোগী যেন বিনা চিকিৎসা বা অপচিকিৎসায় মারা না যায় তার ব্যবস্থা করা।বিনামূল্যে/স্বল্পমূল্যে হৃদরোগ, চোখের ছানী, ঠোঁটকাটা, খৎনা, ভেরিকজ ভেইন ইত্যাদি চিকিৎসার জন্য নিয়মিত মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা।এলাকা থেকে মাদকাসক্তি দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

অত্র এলাকার ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে আছে। এই লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

স্কুল, কলেজ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া।এলাকার ছেলে-মেয়েদেরকে দক্ষ জনশক্তি হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভকেশনাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা।অত্র এলাকায় প্রতি বছর ১৯০০০ মেট্রিকটন খাদ্য উদ্বৃত্ব থাকে। তাছাড়া এখানে পাট, ভুট্টা, সরিষা, শাক-সবজি প্রচুর উৎপন্ন হয়। প্রসেসের অভাবে অনেক শাক-সবজি নষ্ট হয়ে যায়।তাই দুই উপজেলায় সরকারী/বেসরকারী উদ্যোগে দুটি কোল্ড ষ্টোরেজ প্রতিষ্ঠা করা।গরীব চাষীদের স্বল্পমূল্যে বীজ, সার প্রদান করা।প্রতি গ্রামে ২০০ করে ফলয, বনজ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপন করা।চাষীরা যেন ধান, পাট, শাক-সবজি ইত্যাদির ন্যায্য মূল্য পায় তার ব্যবস্থা করা।

অত্র এলাকা নদীবাহিত ও হাওড় সংলগ্ন। এখানে হাঁস ও মাছের উৎপাদন বহুগুন বৃদ্ধি করা সম্ভব। ইলিশ মাছের মত হাওড় এলাকায় মাছের ডিম পাড়ার সময় মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে এবং মৎস্যজীবীদেরকে প্রণোদনা দিলে হাওড়ে মাছের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে।

এই এলাকার কোন কোন গ্রাম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ ইত্যাদি নির্মাণে আরো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।গ্রাম্য সালিশ, পঞ্চায়েত ইত্যাদির ব্যবস্থা জোরদার করে মামলা-মোকাদ্দমা থেকে মানুষকে নিরুৎসাহিত করা।সংখ্যালঘুদের ন্যায়সংগত অধিকার ও নিরাপত্তায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ।আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

যাকাত ও করজে হাসানা ভিত্তিক প্রকল্প এবং ‘সামাজিক ব্যবসা’ প্রকল্প শুরু করা।গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির ব্যবস্থা করা।