শরীয়ত পরিপন্থী কর্মকান্ড
রাজবাড়ীতে নূরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে জ্বালিয়ে দিয়েছে জনতা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগল নামের এক ব্যক্তির কবর উত্তোলন করে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, মৃতদেহকে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচু বেদিতে দাফন করা ‘শরীয়ত পরিপন্থী’, যা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের কারণ হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের পর বিক্ষুব্ধ জনতা নুরুল হকের কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে পদ্মার মোড় এলাকায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় কয়েকটি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়; মধ্যে রয়েছে পুলিশের দুইটি ডাবল কেবিন পিকআপ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একটি গাড়ি।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সীমান্তে ৫ কোটি টাকার ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে জব্দ করেছে বিজিবি
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফ আল রাজীবও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, নুরুল হক গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নিজের বাড়িতে দরবার শরিফ গড়েছিলেন। আশির দশকের শেষ দিকে তিনি নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করলে জনরোষ তৈরি হয়। ১৯৯৩ সালের ২৩ মার্চ মুচলেকা দিয়ে তিনি এলাকা ত্যাগ করেছিলেন, কিন্তু কয়েকদিন পর ফের এসে কার্যক্রম শুরু করেন।
আরও পড়ুন: কাপাসিয়ায় বিএনপি নেতা শাহ রিয়াজুল হান্নানের ব্যাপক গণসংযোগ
গত ২৩ আগস্ট ভোরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় তাঁর মৃত্যু হয়। ওইদিন রাতে এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং ভক্তদের অংশগ্রহণে দ্বিতীয় জানাজা শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে বিশেষ কায়দায় দাফন করা হয়। কবরের বেদি পবিত্র কাবার আদলে রঙ করা ছিল।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় আলেম সমাজ ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ‘ইমাম-আকিদা রক্ষা কমিটি’ গঠন করেছেন। কমিটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে কবর দেওয়ার বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার অনুরোধ করেছে।
জেলা জামায়াতে ইসলামী’র আমীর অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম বলেন, মৃতদেহকে কবর দেওয়ার পদ্ধতি ইসলামি রীতির পরিপন্থী। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী কবর দেওয়ারও অনুরোধ করেছেন। ইমাম আকিদা রক্ষা কমিটি জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।