আশিয়ান সিটির বিরুদ্ধে প্লট দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন বিউটির

Sanchoy Biswas
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০৫ অপরাহ্ন, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:০৫ অপরাহ্ন, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর দক্ষিণখানের বাসিন্দা উম্মে সালমা বিউটি অভিযোগ করে বলেছেন, আশিয়ান সিটি সন্ত্রাসী দিয়ে আমার প্লট দখলের পাঁয়তারা করছে। আমার জমির সীমানা ভেঙে দিয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের আমলে আমার উপর কয়েকবার হামলা করেছে। শুধু আমার জমি নয়, আশপাশে অন্যান্য মালিকদের জমি দখলের চেষ্টা করছে ভূমিদস্যু আশিয়ান সিটি।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে আশিয়ান সিটির অবৈধ জমি দখল, প্রতারণা ও জালিয়াতির বিরুদ্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী উম্মে সালমা বিউটি এ অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উম্মে সালমা বিউটি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার কষ্টে উপার্জিত টাকা দিয়ে জমি কিনেছি, আশিয়ান সিটির সন্ত্রাসীদের আক্রমণে আমি জায়গা দেখতেও যেতে পারছি না। ভেবেছিলাম ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকার শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করবে। দেশে ভূমিদস্যুদের আর কোনো আধিপত্য থাকবে না। কিন্তু ভূমিদস্যুরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, তারা আমারসহ আশপাশের নিরীহ মানুষের জমি দখলে নেমেছে।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ওসিকে বারবার জানানো হলেও এমনকি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তারা। আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া ও তার ভাইদের গড়ে তোলা নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা ভুক্তভোগীদের মেরে ফেলার হুমকিও দেন, দিচ্ছেন। প্রাণের ভয়ে এলাকার অনেক ভুক্তভোগী তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতে চান না।

আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা

তিনি আরও বলেন, গত ২০০৮ সালে দক্ষিণ পূর্বাচলে পাঁচ কাঠা জমি আবুল হোসেন (তোফাজ্জল চেয়ারম্যানের ভাই) এর কাছ থেকে ক্রয় করি। এরপর জমিতে চারদিকে বাউন্ডারি করে রাখি। কিন্তু আশিয়ান সিটি তার গড়ে তোলা সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা আমার জমির আরসিসি প্রাচীরের আংশিক ভেঙে দিয়েছে। আবার বাউন্ডারি করা হলে তা পুনরায় ভেঙে দেয় তারা। শুধু বাউন্ডারি ভাঙা নয়, মালিকানা জমি দখলে গেলে আশিয়ান সিটির সন্ত্রাসীরা নানাভাবে ও বিভিন্ন কায়দায় হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে ও নিজের অর্থে কেনা জমি উদ্ধার করতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উল্লেখ্য, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে আশিয়ান সিটির আবাসন প্রকল্পের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে জমি কেনা-বেচার অভিযোগও ছিল বিস্তর। গত ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা নতুন করে জমি দখল এবং জালিয়াতির মাধ্যমে কাজ শুরু করে।

এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজউক আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের অধীনে পরিচালিত আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সব ধরনের বিজ্ঞাপন, প্লট বিক্রি ও প্রচার কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রকল্পের সীমানা নির্ধারণ ও অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রাজউকের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছিল। এর আগেও ১ এপ্রিল ২০২৪ সালে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেলের আওতাভুক্ত এলাকায় ৭ দশমিক ৮৯২৫ একর সরকারি জমি দখল করে বালু ভরাট করে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে আশিয়ান সিটির বিরুদ্ধে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী উম্মে সালমা বিউটির সাথে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল মান্নান খান, আবু তাহের ও মো. জাকির হোসেন।