বিপুল ভোটে জয়লাভের আশা জামায়াতের
জয়পুরহাটে দুটি আসনে বিএনপির ১ ডজনের বেশি মনোয়ন প্রত্যাশী

সীমান্তবর্তী জেলা জয়পুরহাট। এখানে ২টি সংসদীয় আসন রয়েছে। একটি জয়পুরহাট-১ আসন, অন্যটি জয়পু- রহাট-২ আসন। জয়পুরহাট সদর ও প- চিবিবি উপজেলা নিয়ে জয়পুরহাট-১ আসন গঠিত হয়েছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জয়পুরহাট- ০১ আসনে নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে অনেক প্রার্থী মাঠ চষে বেড়া”েছন। নির্বাচনকে সামনে
রেখে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী এলাকায় জানান দিছেন। এ দুটি আসনেই জামায়াতে ইসলামীর চিত্র অন্য রকম। দলটি দুটি আসনের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করে দেখ তানতাৰ হোসেন রেখেছে। জয়পুরহাট-১ আসনে বিএন- জয়পুরহা পির প্রায় ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যা”েছ। তাদের মধ্যে অনেকেই জোরেশোরে নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ করছেন। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জেলার দুটি আসনের একটিতেও বিজয়ী হতে পারেনি। বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, একসময় জয়পুরহাট বিএনপির দুর্গ বলে পরিচিতি ছিল। ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জেলার দুটি সংসদীয় আসন বিএনপির দখলে ছিল। এরপর আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট-১ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী মোজাহার আলী প্রধান ও জয়পুরহাট-২ আসনে ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মোজাহার আলী প্রধান মারা গেছেন। তিনি জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তাঁর ছেলে মাসুদ রানা প্রধান এখন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কের পদে আছেন। জয়পুরহাট জেলা বিএনপিতে দুটি গ্রুপ বিদ্যমান থাকলে বর্তমানে গ্রুপিং নেই। বর্তমানে একসাথে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করতে দেখা যা”েছ। জামায়াতের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাট-১ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। জয়- পুরহাট-১ আসনে জামায়াতের দলীয় প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ফজলুর রহমান সাঈদ। দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী মোঃ মাসুদ রানা প্রধান আশেয়ারুল হক আৰু প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন। কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি থেকে পোলিং এজেন্টের তালিকাও করা শেষ। ইতিমধ্যে তিনি প্রত্যেকটা ইউনিয়নে গণসংযোগ শুরু করেছেন। জয়- পুরহাট-১ আসনের প্রার্থী ফজলুর রহমান সাঈদ বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট-১ আসনে আমাদের সকল প্রগতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তবে ইনশাআল্লাহ জামায়াতে ইসলামী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে বলে আশাবাদী। তিনি আরও বলেন, জনগণ ইতিমধ্যেই পরিবর্তনের জন্য প্রতি সাধারণ সর্বস্তরের মানুষ সৎ নেতৃ ত্ব ও সৎ লোকের শাসন কামনা করে এবং আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করে। তাই ন্যায়ের পক্ষে ও গণমানুষের আশা-আকাঙ্খা পূরণের লক্ষ্যে আমরা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যা"িছ। বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, জয়পু- রহাট-১ (জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি) আসনে যারা দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি ফয়সল আলিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক প্যানেল মেয়র গোলজার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রধান, শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান উজ্জল প্রধান, জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও উপদেষ্টা এ্যাড. তানজির আল ওহাব, জেলা জয়পুরহাটে দুটি আসনে
বিএনপির সাবেক সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিল্পপতি সিআইপি আনোয়ারুল হক আনু, সাবেক পাঁচৰিব উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল গফুর মন্ডল। জয়পুরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলজার হোসেন ও মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনি অনেক কয়টি রাজনৈতিক মামলার আসামি। তিনি জয়পুরহাট সরকারি কলেজের প্রো-ভিপি এবং ছাত্র প্রতিনিধি ছিলেন, কলেজ শাখা ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক, শহর শাখা ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে তিনি জয়পুরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুই পৌর কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্যানেল মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা
বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়সল আলিম, স্বৈরাচার সরকার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন, তিনি বলেন জয়পুরহাটের প্রেক্ষাপটে দল আমাকে মনোনয়ন দিবে। আল্লাহ যদি কামিয়াব করে আমি নির্বাচিত হই তাহলে জয়পুরহাট-পাঁচবিবিকে নতুন করে সাজাব। টাকার বিনিময়ে কাউকে সরকারি সেবা গ্রহণ করতে হবে না। সেই সাথে ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত জয়পুরহাট গড়ার অভিপ্রায় রয়েছে আমার। ফয়সল আলিম এর পিতা জয়পুরহাট-পাঁচবিবি আসন হতে একাধিক বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার পিতা ১৯৭৮ সাল হতে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের বস্ত্র মন্ত্রণালয় ও পরবর্তীতে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ফয়সল আলিম দলীয় বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন, তিনি জয়পুরহাট শহর শাখা বিএনপির সভাপতি ২০০০-২০০১ সাল, স্বেছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ১৯৯৬-২০০১ সাল, বিএনপি কানাডা ইউনিট এর সিনিয়র সহ-সভাপতি, ১৯৯১-১৯৯৬ সাল, জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল জয়পু- রহাট জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ১৯৮১-১৯৯০ সাল, বি.এন.পি. সমর্থিত একটি গবেষণাধর্মী সংগঠন জি৯ এর সহ-সভাপতি এবং বর্তমানে ২০১৬ সাল থেকে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রধান, এর পিতা জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি ও জয়পুরহাট-০১ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। মাসুদ রানা প্রধানের বিরুদ্ধে ২৬ টি রাজনৈতিক মামলা চলমান রয়েছে।৩৬ মাস ফেরারি কারাবন্দী সহ ৪ বছর। রানা প্রধান ১৯৯৩ সালে জয়- পুরহাট জেলা ছাত্রদলের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ সালে জয়পুরহাট সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের এজিএস নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে জয়পুরহাট সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে জয়পু রহাট জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে জয়- পুরহাট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে জয়পুরহাট জেলা বিএনপি'র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে জয়পুরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।২০২০ সালে জয়পুরহাট জেলা বিএনপি'র যুগ্ম-আহবায়ক নির্বাচিত হন।২০২৩ সাল হইতে বর্তমান পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলা বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম- আহবায়ক (সদস্য সচিব) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আবু রায়হান উজ্জল প্রধান বলেন, দল যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিবে আমরা সকলে মিলে তার পিছনে কাজ করবো ইনশাল্লাহ। গত ১৫ বছরের অনেক মামলা হামলার শিকার হয়েছি। তিনি ১৯৯০ সালে ছাত্রদলের প্রত্যক্ষ কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে বৃহত্তর তিনটি ওয়ার্ড ৪/৫/৬ ছাত্র দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯১ এ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেল থেকে জয়পুরহাট কলেজ ছাত্র সংসদের ভোটে কমনরুম সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছাত্রদলের কনিষ্ঠ সদস্য ৬৮ নাম্বার সদস্য ১৯৯৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত, জেলা যুবদলের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক। ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি, ২০২০-২০২১ জেলা বিএনপির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল থেকে পর্যন্ত জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক। ২০২৪ সালের পহেলা নভেম্বর জয়পুরহাট শহর বিএনপির কাউন্সিলের প্রত্যক্ষ ভোটে শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এ্যাড. তানজির আল ওহাব সাবেক ছাত্র নেতা ছিলেন। এ্যাড. তানজির জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি এবং উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বর্তমানে লন্ডন প্রবাসী এবং ইউকে আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাবেক চেম্বারের সভাপতি এবং জেলা বিএনপির সদস্য বিস্তার এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আনোয়ারুল হক আনু একজন সদালাপী বিনয়ী স্বভাবের নেতা হিসেবে পরিচিত এবং অসহায় দুস' মানুষের পাশে তাকে সবসময় দেখা যায় । তার পিতা জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। তিনি বর্তমানে ফিড ইন্ডাস্ট্রি এ্যাসোসিয়েসান বাংলাদেশ এর সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্রিডার্স এ্যাসোসিসান অব বাংলাদেশ এর সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জয়পুরহাট ডায়াবেটিক সমিতির সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জয়পুরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এবং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি হানাইল নোমানিয়া কামিল মাদ্রাসার সহ সভাপতি ছিলেন।
আব্দুল গফুর মন্ডল একজন নির্যাতিত নেতা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্রসফায়ারের আসামী এবং বিএনপির একজন সংক্রিয় কর্মী। গফুর মন্ডল বলেন,আমার মতো নির্যাতিত আর কেউ নাই তাই বিএনপি মনোনয়ন আমাকে দেওয়া হোক। এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকেও প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে উপজেলা কমিটি সম্পন্ন করার পর তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন তারা। জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলগুলোর তৎপরতা তেমন দেখা যা”েছ না। অপর দিকে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মযজ্ঞে উত্তপ্ত জয়পুরহাট-২ আসন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন থেকেই ভোটের মাঠ গরম করে তুলেছেন।
ভোটারদের মন জয় এবং দলের কাছে নিজেদের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে তারা প্রতিদিনই নতুন নতুন কর্মসূচি হাতে নি”েছন। বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আয়োজনের মাধ্যমে প্রার্থীরা নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টা চালা”েছন। আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়সীমা নির্ভর করবে সংস্কারের বিষয়ে কতটা ঐকমত্য তৈরি হয় তার ওপর। তবুও নির্বাচনের সূত্র ধরে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে প্রার্থীরা এখন থেকেই মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা শুধু দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গেই নয়, সাধারণ ভোটারদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন। ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক, দোয়া মাহফিল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তারা নিজেদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা" বাস্তবায়নে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে প্রার্থীরা বিশেষ প্রচারণা চালা”েছন। গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে শহরের অলিগলি সব জায়গায়ই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এই আসনে কে পাবেন বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন। জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনয়ন পেতে ছয়জন নেতা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। সাবেক সচিব ও ডিসি আব্দল বারী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন (২১ জুলাই ২০২৫ ইং) সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দলটিতে যোগদান করেন তিনি। জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক আয়োজনের মাধ্যমে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ, প্রার্থীর ভাবমূর্তি দৃঢ় করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলে। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাং- গঠনিক সম্পাদক এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) "রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা” বাস্তবায়নে প্রচারণা চালা”েছন। সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমি- টির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা একজন প্রকৌশলী। তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসন থেকে আওয়ামী লীগ এর প্রার্থী আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন কে ১৬০০ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা” বাস্তবায়নে প্রচারণা চালা”েছন নানা কর্মসূচিতে। লায়ন সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক, জয়পুরহাট জেলা বিএনপি । তিনি গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে শহরের অলিগলি সব জায়গায়ই তারেক রহমানের ঘোষিত “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা” বাস্তবায়নে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে প্রচারকার্য চালা”েছন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংান মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সর্বো”চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ক্যাটাগরিতে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সিআইপি (এনআরবি) ২০২৫-পুরস্কারে ভূষিত হন ইঞ্জিনিয়ার আমিনুর ইসলাম সিআইপি। তিনি জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি) এর সদস্য, আইইবি ওমান ওভারসিজ চ্যাপ্টার এর চেয়ারম্যান এবং সাবেক ছাত্রদল নেতা। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস- ২০২৪ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাকে সম্মাননা তুলে দেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। বাবার হাত ধরে সন্তান হিসাবে তাঁর রাজনীতিতে আসা। সেই থেকেই রাজনীতির সূচনা হয় ছাত্রজীবনে, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) ছাত্রদল থেকে। গত ১৫ বছর ধরে কোনো প্রচারবিমুখভাবে, মিডিয়া ছাড়া, নিজের টাকায় বারবার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। কখনো নগদ অর্থ দিয়ে, কখনো খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করে তিনি গরিব, দুর্গ' ও মেহনতী মানুষের জীবনযাত্রায় আশার আলো জ্বালিয়েছেন। শুধু একবার নয়, বছরের পর বছর ধরে তিনি জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অসংখ্য পরিবারকে আর্থিক সহায়তা, খাবার ও কাপড় পৌঁছে দিয়েছেন। একই সময় তিনি বিএনপির ভাবমূর্তি রক্ষা, সংগঠনের চেতনা জিইয়ে রাখতে পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল বিলি করেছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা” বাস্তবায়নে বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন । দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়ে চলা এক সাহসী রাজপথের যোদ্ধার নাম আব্বাস আলী। জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে তিনি এখন ভোটারদের মুখে মুখে আলোচনার শীর্ষে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক অন্যতম সদস্য আব্বাস আলী বর্তমানে উত্তরাঞ্চল জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজপথে বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েও তিনি রাজনীতি থেকে একচুলও সরে দাঁড়াননি। “রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা” বাস্তবায়নে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে প্রার্থীরা বিশেষ প্রচারণা চালা”েছন। অন্যদিকে জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর, কালাই ও ক্ষেতলাল) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য (এমপি) প্রার্থী হিসেবে মনোনিত হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এস. এম. রাশেদুল আলম সবুজ। তিনি স'ানীয়ভাবে একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও জনবান্ধব নেতা হিসেবে সু- পরিচিত। এস. এম. রাশেদুল আলম সবুজ আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতে ইসলামীর জয়পুরহাট জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইসঙ্গে তিনি জেলা শাখার সংগঠন-পরিকল্পনা ও যুব বিভাগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও রয়েছেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই তিনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং পরবর্তীতে জেলা সভাপতি হিসেবে যুগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জয়পুরহাট-২ (কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর) উপজেলার ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সভা-সমাবেশ, উঠান বৈঠক ও ইসলামিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রচারণা চালা”েছন।
এলাকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন এবং প্রার্থীদের তৎপরতা দেখে মনে হ”েছ বিএনপি মনোনয়নের জন্য তৃণমূলের সমর্থনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এ কারণে সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রতিনিয়ত স্পনীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করছেন এবং নানা কর্মসূচিতে একসঙ্গে কাজ করছেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণার পর এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও তীব্র হবে বলে রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা চলছে। সানীয় ভোটাররাও এখন থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কর্মকাণ্ড গভীর নজরে পর্যবেক্ষণ করছেন। সরজমিনে ঘুরে পানীয় রাজনীতিবদ ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে যানা গেছে, জয়পুরহাট-২ আসনে সৎ, যোগ্য, নিষ্ঠাবান, তরুন, দূর্নীতিমুক্ত ও দলীয় গ্রুপিং মুক্ত প্রার্থী দিলে জয় নিশ্চিত।