ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬

সিলেটে বিএনপি নেতারা ব্যস্ত মনোনয়ন দৌড়ে: গনসংযোগে জামায়াত

Any Akter
জুলফিকার তাজুল, সিলেট
প্রকাশিত: ৪:৩০ অপরাহ্ন, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:৪০ অপরাহ্ন, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত
  • ৬টি আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী, বিপাকে হাইকমান্ড
  • জামায়াতের আসনভিত্তিক প্রার্থী ঘোষণা ৫ মাস আগে 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই সিলেট জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে বইছে ভোটের আগাম হাওয়া। দিন যতই এগোচ্ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ ততই বাড়ছে। মনোনয়ন নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের চলছে নানামুখী তৎপরতা।

চায়ের দোকান থেকে বাসাবাড়ি কিংবা সামাজিক কোনো অনুষ্ঠানের আড্ডায় দলীয় নেতাকর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চলছে মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা।

আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা

বিএনপির হাইকমান্ড অত্যন্ত গোপনে তিন স্তরে যাচাই- বাছাই মনোনয়ন কার্যক্রম চালাচ্ছেন। মনোনয়ন কার্যক্রম চলমান থাকা সত্ত্বেও স্ব স্ব প্রার্থী নিজ আসনে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই প্রবাসী প্রার্থীরাও। তারাও মনোনয়ন আদায়ে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সময় অতিবাহিত করছেন। এবং দলের হাইকমান্ডের নজর কাড়তে কৌশলে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের মধ্যে সিলেট জেলায় রয়েছে ৬টি আসন। এ আসনগুলোতে  বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রার্থী বাছাইয়ে সেদিক থেকে জামায়াতে ইসলামী অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। কারণ প্রায় ৫ মাস পুর্বে তারা দলীয়ভাবে সিলেটের সবকটি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে মাঠে ময়দানে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে নিজ নিজ এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন।

আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়

অবৈধ ডামি নির্বাচনে হাত ছাড়া হওয়া সিলেটের হারানো দুর্গ ফিরে পেতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফার সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় ধানের শীষের প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

এদিকে সিলেট জেলার ৬টি আসনেই ভাগ বসাতে চায় জামায়াত। তাই দীর্ঘদিন থেকে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে ভোটের মাঠে ইফতার মাহফিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। 

তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলে আসছেন তারা ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের হাতে এবার ধানের শীষ তুলে দিবেন। সেক্ষেত্রে অতীতে যারা বিএনপির চরম দুর্দিনে নেতাকর্মীদের নিয়ে যারা রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন তাদেরও মূল্যায়ন করা হবে। 

ইতিমধ্যে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জোর লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অনেকেই ছুটছেন যুক্তরাজ্যে। সেখান থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দোয়া নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণা শুরু করেছেন। তারা স্থানীয় পর্যায়ে শুভেচ্ছা বিনিময় ও নিজ সমর্থকদের মধ্যে আলোচনা করে প্রার্থীতা পেতে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। 

সিলেট–১ মর্যাদাপুর্ণ আসন (মহানগর ও সদর)

সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের সময় পুরো দেশ তাকিয়ে থাকেন সিলেট-১ আসনের দিকে। কোন দল সরকার গঠন করবে, তা আগাম নিশ্চিত হওয়া যায় এ আসনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। যার কারনে এই আসনকে মর্যাদার আসন হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ‘বলা হয়ে থাকে’ এ আসন যার সরকার গঠন তার।

হযরত শাহজালাল (রহ.)- এর মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে অধিকাংশ দলের নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হয় এখান থেকে।   অপ্রিয় হলেও সত্য এই ধারা চলে আসছে বহুযুগ থেকে। 

সিলেট জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের ৫ জন উপদেষ্টা এবং তারেক রহমানের দুই উপদেষ্টাসহ দলীয় ২৯ প্রার্থী নির্বাচনের প্রত্যাশা নিয়ে মাঠে ময়দানে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও জামায়াত ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়নি। প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। 

মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে বিএনপির চেয়ারপার্সনের দুই উপদেষ্টা 

খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় রাজনৈতিক কর্মসুচি ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

১৯৯১ সালে এই আসনে প্রয়াত খন্দকার আব্দুল মালিক বিএনপির প্রার্থী হয়ে দুইবার বিজয়ী লাভ করেন। তারই কনিষ্ঠ পুত্র বিশিষ্ট ব্যবসায়ী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। তিনি দলের ক্লিন ইমেজ নেতা হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত। 

অপর প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি কর্পোরেশনের দুইবারের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন। মেয়র থাকাকালীন সময়ে তিনি নগর উন্নয়নে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। এখনো তিনি নগরবাসীর কাছে অধিক জনপ্রিয়। 

সম্প্রতি মেয়র আরিফ লন্ডনে গিয়ে তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে দেশে ফিরে জোরে শোরে নির্বাচনী তৎপরতা শুরু করেন। তিনি গত জুলাই মাসের ১১ তারিখ সিলেট নগরের বন্দর বাজার জামে মসজিদে জুম্মার নামাজের পর আনুষ্ঠানিকভাবে সিলেট -১ আসনে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি জনগণের ইজাজত নিয়ে মাঠে নেমেছি। আজ থেকে আমার প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু। যদিও পরবর্তীতে তিনি অন্য একটি অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ইঙ্গিত প্রদান করেছেন। 

এছাড়া সিলেটের কৃতি সন্তান বেগম খালেদা জিয়ার পূত্রবধু ড. জুবাইদা রহমানকে প্রার্থী করার জন্য একটি মহল চেষ্টা করলেও তা ভেস্তে যায়। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির। গড়ে প্রতি আসনে ৫/৬ জন করে প্রার্থী রয়েছেন।

এদিকে জামায়াতে ইসলামী সিলেট-১ আসনে সিলেট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমানকে নিজ দলের একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি নিজ দলের পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে বিভিন্ন সামাজিক সংঘটনের ব্যানারে সভা-সমাবেশ গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে সিলেটের স্বনামধন্য বেসরকারি হাসপাতাল ইবনে সিনার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এবং বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমে দীর্ঘদিন থেকে সরাসরি জড়িত রয়েছেন। এর আগে মাওলানা হাবিবুর রহমান ২০০৮ সালের নির্বাচনে সিলেট-৬ আসন (গোলাপগঞ্জ- বিয়ানীবাজার) থেকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। 

এ ছাড়াও অন্যান্য ইসলামি দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। খেলাফত মজলিসের হাফেজ মাওলানা তাজুল ইসলাম হাসান, জমিয়তে উলামায়ের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন দল এনসিপি ও গণ অধিকার পরিষদের কোনো প্রার্থীকে মাঠে এখনো সক্রিয় দেখা যায়নি।

সিলেট–২ আসন (বিশ্বনাথ ও সমানীনগর)

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের দুই জনপদ বিশ্বনাথ–ওসমানীনগর। এ দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-২ সংসদীয় আসন। বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরের একাধিক বারের নির্বাচিত ও জনপ্রিয় সাবেক এমপি নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর জীবদ্দশায় এখানে ভিন্ন দলের কেউ এমপি হতে পারেননি। লোকমুখে তার সময়ে ব্যাপক উন্নয়নের জন্য তাকে উন্নয়নের কান্ডারী বলে ডাকা হতো। 

তিনি শুধু নির্বাচনী এলাকায় নন, সারাদেশে জনপ্রিয় রাজনীতিবীদ হিসেবে আলোচিত ছিলেন। 

ভারতের টিপাই মূখ বাঁধ বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি দেশবাসীর দৃষ্টি কাড়েন। এরপরই তিনি ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকার বনানী থেকে শুমের শিকার হোন।

গুম হওয়ার পর ২০১৮ সালে নির্বাচনে তার সহধর্মীনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার তাহসিনা রুশদীর লুনাকে মনোনয়ন দেয়া হলেও তিনি নির্বাচন করতে পারেন নি। পরবর্তীতে বিএনপি এই আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে গণফোরামকে ছেড়ে দেয়। বিএনপির সর্মথন নিয়ে এই আসনে তৎকালীন সময়ে গণফোরামের প্রার্থী বিজয়ী হোন।

বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপির নেত্রী হিসেবে একক আধ্যিপত্ব রয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদী লুনার। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেকে তিনি ছিলেন এই আসনের একক প্রার্থী। সম্প্রতি তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা লন্ডন প্রবাসী হুমায়ুন কবিরের নামও আলোচনা হচ্ছে তার অনুসারীদের মধ্যে। জানা যায়, তারেক রহমানের গ্রীন সিগনাল পেয়ে তিনি দেশে এসে নির্বাচনী তৎপরতা বেশ জোরে শোরে চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে মাঠে দীর্ঘদিন থেকে লুনাই সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে দলকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন। 

এদিকে সিলেট-২ আসনে ইতিমধ্যে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও জেলা শাখার নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুল হান্নান। তিনি দলীয় ব্যানার ছাড়াও বিভিন্ন সভা সেমিনারসহ মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন।এবং নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন জামায়াতের এই নেতা।

এছাড়া খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সাবেক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ মুনতাসির আলীকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। 

দলীয় মনোনয়ন পেয়ে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হচ্ছেন। এবং নিজ এলাকায় গণসংযোগ ও মতবিনিময় করছেন। 

অন্যান্য ইসলামি দলগুলোর মধ্যে জমিয়তে উলামায়ের প্রার্থী হাফেজ হোসাইন আহমেদ, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাওলানা আমির উদ্দিন নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিলেট–৩ আসন (দক্ষিণ সুরমা, বালাগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জ) 

সিলেট শহর ঘেঁষা দক্ষিণ সুরমা উপজেলা, দেশের বৃহত্তম সার ও গ্যাস উৎপাদন কারখানা ফেঞ্চুগঞ্জ ও শীতল পাটি খ্যাত  প্রবাসী অধ্যুষিত বালাগঞ্জ এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসন। এ আসনে  সংসদ নির্বাচনে দেশ-বিদেশের বিএনপির বাঘা বাঘা হেভিওয়েট প্রার্থী মনোনয়ন দৌড়ে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই তাঁদের পক্ষে কর্মী-সমর্থকেরা নানা ধরনের অনুষ্ঠান ও সভা-সমাবেশ আয়োজনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন।

এদিকে বিএনপির প্রার্থী যাচাই-বাছাই নিয়ে কাজ চলমান থাকা অবস্থায় জামায়াতে ইসলামীর দলীয় একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার জননন্দিত সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা লোকমান আহমেদকে। তিনিও বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সভা সমাবেশে ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করছেন। দক্ষিণ সুরমায় দলীয় প্রভাব ছাড়াও ব্যক্তি লোকমানের রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। 

বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ মালেক, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম এ সালাম,  সিলেট মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি, বিএনপির প্রবীন নেতা মরহুম এম এ হক পুত্র ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম হক আদনান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবদুল আহাদ খান জামাল।

তৃণমূল থেকে উঠে আসা মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী একজন দক্ষ ও জনবান্ধব নেতা হিসেবে কর্মী-সমর্থকদের কাছে পরিছিত। যিনি ফ্যাসিবাদের কঠিন সময়ে দলের হাল ধরে ছিলেন। তিনি সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের রাজনৈতিক সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

বিএনপি পরিবারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার সালাম নিজ নিজ এলাকায় নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতা এম এ মালেক ইতিমধ্যে বিএনপির মহাসচিবসহ কেন্দ্রীয় হাফডজন নেতাদের নিয়ে সিলেটে দুটি সমাবেশ করে দলের তৃনমুল নেতাকর্মীদের জানান দিয়েছেন। 

খেলাফত মজলিসের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনি মাঠে সরব রয়েছেন সিলেট জেলা খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দিলোয়ার হোসেন। তিনিও মাঠে ময়দানে চষে বেড়াচ্ছেন।

এ আসন থেকে এবারের নির্বাচনে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারির তরুণদের দল এনসিপি দলীয়ভাবে নির্বাচনের গ্রীন সিগনাল পেয়েছেন ব্যারিস্টার নুরুল হুদা জুনেদ। তিনি যুক্তরাজ্য প্রবাসী দলের কেন্দ্রীয় নেতা। ইতিমধ্যে তিনি নিজ এলাকায় উঠান বৈঠকসহ সামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিলেট–৪ আসন (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ)

খনিজ সম্পদে ভরপুর উত্তরপূর্ব সীমান্তের অন্যতম পর্যটন এলাকা কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর নিয়ে সিলেট-৪ আসন গঠিত। দেশের আলোচিত জনপ্রিয় পর্যটন স্পট জাফলং, সাদাপাথর, বিছনাকান্দি, লালাখাল, রাতারগুল, পান্থুমাই, উৎমাছড়া এই আসনে রয়েছে। 

এ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাসহ মনোনয়নের আশায় মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন একাধিক প্রার্থী। আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী।ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আন্দোলন তিনি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন। যার ফল স্বরূপ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ লাভ করেছেন। কিছুদিন তিনি মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাবেক ছাত্রদল নেতা বদরুজ্জামান সেলিম লন্ডন থেকে ফিরে নির্বাচনের আগ্রহ নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন। এ আসনে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মসুচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য যুক্তরাজ্য প্রবাসী হেলাল উদ্দিন আহমদ এবং সাবেক ছাত্রদল নেতা ও সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, এডিশনাল পিপি এডভোকেট আল আসলাম মুমিন। তারাও দলীয় মনোনয়ন ও তৃণমূলের সমর্থন পেতে নানা সামাজিক কর্মকান্ড চালাচ্ছেন।

বিএনপির ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশীর বিপরীতে মাঠে রয়েছেন জামায়াতের একক প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে নিজ আসনে বিভিন্ন সামাজিক সংঘটন ও দলীয় ব্যানারে জনগণের দারগোড়ায় পৌছে নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। এছাড়াও একাধিকবার উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছে তার গ্রহণ যোগ্যতা। দলীয় প্রভাব ছাড়াও এ আসনে রয়েছে তার বিশাল ভোট ব্যাংক। 

খেলাফত মজলিস থেকে এই আসনে মনোনীত হয়েছেন শায়েখ মুফতি আলী হাসান উসামা। তিনিও দলীয় ব্যানারে সভা সমাবেশ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান ব্যস্ততম সময় পার করছেন। 

এই আসনের পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের  সাবেক প্রবাসী ও কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ বর্তমানে একাধিক মামলায় কারাগারে রয়েছেন। সম্ভাবনাময় এই আসনের প্রাকৃতিক সম্পদ হরিলুট করেছেন ইমরান আহমদ ও তার একান্ত আস্থাভাজন লিয়াকত আলী গং।

সিলেট–৫ আসন (জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট)

আলেম-ওলামা পীর মাশায়েখদের স্মৃতিবিজরিত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীবেষ্টিত সীমান্তবর্তী দুই জনপদ জকিগঞ্জ ও কানাইঘাটের নির্বাচনী মাঠ সরগরম হয়ে উঠেছে। ২০০১ সালে এই আসন থেকে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছিলেন। এমপি নির্বাচিত হয়ে তিনি এই আসনে বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মসজিদ মাদ্রাসা, রাস্তাঘাটসহ উন্নয়নমুলক কাজ করে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ জনিত কারণে নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছেন। 

এ আসনে সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের একক প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন সিলেট জেলা জামায়াতের নায়েবি আমীর হাফেজ আনোয়ার হোসেন খাঁন। তিনিও দীর্ঘদিন থেকে  অত্র এলাকায় দলীয় ব্যানার ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন। 

১৯৯১ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও জোট সরকারের আমলের দোর্দণ্ড প্রতাপশালী নেতা মরহুম হারিছ চৌধুরী নির্বাচন করে পরাজিত হন। এরপর থেকে জোটের প্রার্থীদেরকেই ছেড়ে দেয়া হয় এই আসনটি। এবার বিএনপি প্রার্থীরা ছাড় দিতে নারাজ। তারা একক প্রার্থী ঘোষণা দিবেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

এই আসনে মনোনয়ন দৌড়ে বিএনপির অত্যন্ত হাফডজন প্রার্থী তৎপরতা চালাচ্ছেন। তারা হলেন– সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ (চাকসু মামুন)। 

ছাত্র জীবনে তিনি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আপ্যায়ন সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এজন্য তিনি ’চাকসু মামুন’ হিসেবে পরিচিত। তিনি কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির দীর্ঘ দিনের সভাপতি ছিলেন।

শিক্ষিত ও তরুণ নারী প্রার্থী হিসেবে এই আসন থেকে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর কন্যা যুক্তরাজ্য প্রবাসী ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী। তিনিও  জনসমর্থন পেতে নিরবে নিভৃতে রাজনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবং পিতার সূত্রে বিএনপি হাইকমান্ডের সাথে তার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। মনোনয়ন নিয়ে তিনি বেশ আশাবাদী। 

এছাড়াও রয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, কানাইঘাটের উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আশিক উদ্দিন চৌধুরী, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক, সিলেট ল’ কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী (ভিপি মাহবুব)। ও ফাহিম আল চৌধুরী ট্রাস্ট্রের চেয়ারম্যান লন্ডন প্রবাসী ফাহিম আল চৌধুরী।

তারা প্রত্যেকে নিজ উদ্যোগে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য বিএনপি হাইকমান্ডের সাথে সাক্ষাৎ এবং তৃণমূলের সমর্থনের জন্য নিজ আসনে সম্পর্ক উন্নয়নে নানা ধরনের সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একক প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রখ্যাত আলেম শায়খুল হাদিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক এবারের নির্বাচনে এ আসনে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক মহলে দুটি সমীকরণ ঘিরে আলোচনা হচ্ছে, দলটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে থাকতে পারে নতুবা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারে।

অন্য ইসলামি দলগুলোর মধ্যে খেলাফত মজলিসের মুফতী আবুল হাসান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতী রেজাউল করিম আবরার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রার্থী রেজাউল করিম জালালী এই আসনে নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সিলেট–৬ আসন (বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ)

সিলেটের দ্বিতীয় লন্ডন খ্যাত প্রবাসী অধ্যুষিত ঐতিহ্যবাহী দুই জনপদ গোলাপগঞ্জ- বিয়ানীবাজার আসনে এবার ভিআইপিসহ বিএনপির সর্বাধিক প্রার্থী মনোনয়ন লড়াইয়ে নির্বাচনী মাঠে ময়দানে ঝাপিয়ে পড়েছেন। দেশ-বিদেশের বিএনপির বিভিন্ন পদধারী অত্যন্ত ৯ জন নেতা/নেত্রী দলীয় মনোনয়ন পেতে তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার  প্রস্তাব নিয়ে মাঠে ময়দানে চষে বেড়াচ্ছেন। তারা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্খীদের সাথে উঠান বৈঠক, সামাজিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন। দলকে সুসংগঠিত ও চাঙ্গা করতে ধানের শীষের প্রতিক নিয়ে সভা সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকেই শিল্পপতি, বিত্তশালী, চিত্রনায়ক, ব্যবসায়ী, আইনজীবী ও লন্ডন প্রবাসীও রয়েছেন।

মনোনয়ন দৌড়ে বিএনপির হেভিওয়েট কয়েকজন প্রার্থীর তৎপরতা লক্ষ করা গেলেও

কয়েকমাস আগে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনকে। দলের প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে তিনি নির্বাচনী এলাকায় গেলো রমজান থেকে ইফতার মাহফিল, গণসংযোগ, দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে সভা সমাবেশ ও বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে যাচ্ছেন। এ আসনে জামায়াতের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে।

সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদ চৌধুরী, তিনি জুলাই  আন্দোলনে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের শহীদ পরিবারগুরোর পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। 

বিএনপির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. মো: এনামুল হক চৌধুরীও এ আসনে নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেট জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীও লন্ডন সফর করে তারেক রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে এসে নির্বাচনী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশায় মাঠে রয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, সাবেক এমপি মরহুম ড. সৈয়দ মকবুল হোসেনের কন্যা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দা আদিবা হোসেন ও জাসাসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খান। 

এছাড়াও যুক্তরাজ্যের টাওয়ার হেমলেটের সাবেক কাউন্সিলর অহিদ আহমদ, সিলেট জেলা বিএনপির সহ শিল্প ও বাণিজ্যক বিষয়ক সম্পাদক তামিম ইয়াহিয়া আহমদ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি জিয়া পরিবারের ঘনিষ্টজন মরহুম কমর উদ্দিনের মেয়ে যুক্তরাজ্যে কাউন্সিলার সাবরিনা খান পপি। 

এদিকে পিতার উত্তরসূরি হয়ে দুই নারী প্রার্থী স্ব স্ব এলাকায় নিজ অনুসারী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা সমাবেশে চালিয়ে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির ৩১ দফার সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে হাটে বাজারে, পাড়া-মহল্লা, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় মকবুল কন্যা আদিবা হোসেন নজর কেড়েছেন। সাধারণ মানুষ, তরুণ ভোটার এবং স্থানীয় বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে তিনি শক্তিশালী জনসম্পৃক্ততা গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারণ এই আসনে তার পিতা মকবুল হোসেনের ছিল আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা।

কমর উদ্দিনের মেয়ে কাউন্সিলার সাবরিনা খান পপি ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সাক্ষাৎ, মতবিনিময় করে নিজের প্রার্থীতার জানান দিচ্ছেন।

এছাড়াও আসনটিতে ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা রফিকুল ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের হাফেজ মাওলানা মো. ফখরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিসের মাওলানা সাদিকুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের আজমল হোসেন নিজ নিজ দলের প্রার্থী হিসেবে কাজ করছেন। 

এদিকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে স্থানীয় লোকজনের সাথে যোগাযোগ রাখছেন বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী ও গণ অধিকার পরিষদের এডভোকেট জাহিদুর রহমান।

নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পলাতক থাকার কারণে পুরো নির্বাচনি মাঠ এখন বিএনপি ও জামায়াতের দখলে। সিলেটের এই ৬টি আসনের অধিকাংশ ভোটাররা আশংকা করছেন নির্বাচনে এ দুটি বড় দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।