নরসিংদীতে জোরপূর্বক সাংবাদিকের বাড়ি দখলের অভিযোগ

নরসিংদী সদর উপজেলায় এক সাংবাদিকের বাড়ি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটে শহরের ভেলানগর এলাকায়।
আরও পড়ুন: নাজিরপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
ভুক্তভোগী সাংবাদিক একেএম তৌহিদুজ্জামান ভেলানগর এলাকার বাসিন্দা মৃত ইঞ্জিনিয়ার শামসুজ্জামানের ছেলে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি ও স্থানীয় ভয়েজ অব নরসিংদী'র প্রকাশক ও সম্পাদক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দুপুরে প্রভাবশালী বাছেদ ও ব্যাংকার শরীফ আহম্মেদ ভাড়াটে লোকজন নিয়ে সাংবাদিক তৌহিদুজ্জামানের বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে মালামাল বাইরে ফেলে দিয়ে বাড়ীটি দখল করে নেয়। এ ঘটনার পর সাংবাদিক একেএম তৌহীদুজামান থানা ও আদালতের শরণাপন্ন হন।
আরও পড়ুন: পিরোজপুর জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে জামায়াতের শুভেচ্ছা
জানা যায়, ভুক্তভোগী তৌহিদুজ্জামানের ভেলানগর মৌজায় তার নিজ বসত বাড়ীটি গত বছরের সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখে ৭০ লক্ষ টাকা মূল্যে থেকে ৩৩ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে একটি রেজিস্ট্রি বায়না করেন এবং আব্দুল বাছেদ ও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা শরীফ আহম্মেদ বরাবরে পাওয়ার অব অটনী দলিল করে দেন। শর্ত মোতাবেক তারা বাড়ীর সমস্ত ঝামেলা সম্পন্ন করে বাকী টাকা পরিশোধ করে বাড়ীটি বুঝে নিবে শর্তে রেজিস্ট্রার বায়না করেন। কিন্তু বাকী টাকা পরিশোধ না করে আব্দুল বাছেদ ও শরীফ আহমেদ সন্ত্রাসীদের দিয়ে বাড়ীটি ছাড়ার জন্য তৌহিদুজ্জামানকে বিভিন্ন হুমকি-দমকি দেন। পরে তারা গত বছরের ১৪ অক্টোবর বহিরাগত লোকজন নিয়ে পরিকল্পিতভাবে তৌহিদুজ্জামানের বাড়িতে আক্রমণ করলে নরসিংদী জেলায় দায়িত্বরত বাংলাদেশ সেনাবাহীনীকে অবগত করলে দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন এবং তাদেরকে সমাধানের জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু বিবাদীগণ আলোচনায় না বসে ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকলে পরে ভুক্তভোগী তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি জিডি দায়ের পাশাপাশি নরসিংদী সদর আমলী আদালতের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ নিয়াজী আদালতে দুইটি মামলা দায়ের করেন। যাহার নং ১৬/২৬ এবং ১০২৭। পরে আদালত বাদীর কথা সন্তোষজনক মনে করে চলতি বছরের ২৯ মে ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন আগামী ১ মাসের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য সিআইডিকে নির্দেশ প্রদান করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। অপরদিকে সাংবাদিক তৌহিদুজ্জামানের বাকি টাকা পরিশোধ না করে তারা আকরাম হোসেন নামে প্রবাসীর নিকট বাড়ীটি বিক্রি করে দেন এবং সাংবাদিককে তার বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় আদালত দুইজন আইনজীবীর উপস্থিতে টাকা পরিশোধ করে আপোষে গেলেও বাকী ২০ লক্ষ টাকা ও ক্রয়কৃত রাস্তার টাকা সহ আনুসাঙ্গিক যাবতীয় ঝামেলা না ভেঙ্গেই বাড়ী দখলের পায়তারা করে। আরও জানা যায়, একটি মহল বাদীর ওপর বিভিন্ন প্রকার চাপ সৃষ্টি করে এবং মামলা গুলো উঠিয়ে নেওয়ার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী তৌহিদুজ্জামান বলেন, থানা, আদালত, আইনজীবী সমিতিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট একাধিক অভিযোগ করা সত্ত্বেও তাদের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছি না। প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় দখলকারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে। বর্তমানে পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
অন্যদিকে দখলকারীদের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তারা দাবি করেন বাড়ীসহ জায়গাটি ক্রয় করে তারা মালিকানাধীন। এ বিষয়ে নরসিংদী মডেল থানা ওসি মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। দুই পক্ষেরই আদালতে মামলা চলমান রয়েছে, আদালতের রায়ের আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।