শ্যামনগরে আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

Sadek Ali
আব্দুল আহাদ, শ্যামনগর সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ১:২৫ অপরাহ্ন, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৫:৫২ অপরাহ্ন, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্ত করার লক্ষ্যে সড়কের উভয় পার্শ্বে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ভূমিতে অবস্থিত সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এক দিকে উচ্ছেদ অভিযান, অন্যদিকে আর্তনাদ। এমনই একটি হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সড়ক উন্নয়নের লক্ষ্যে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শ্যামনগর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে ভেটখালী বাজার অভিমুখে সড়কের উভয় পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করে বিকাল সাড়ে ৫টায় শেষ হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯ টায় পুনারায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে।

আরও পড়ুন: গোবিন্দগঞ্জে অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধার, শিক্ষক গ্রেফতার

প্রসংগত গত এক সপ্তাহ পুর্বে সাতক্ষীরা সড়ক বিভাগাধীন শ্যামনগর-ভেটখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের শ্যামনগর ফায়ার সার্ভিস মোড় হতে ভেটখালী বাজার পর্যন্ত সড়কের উভয় পার্শ্বে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জায়গায় সকল প্রকার অবৈধ স্থাপনা অপসারণ জন্য বিজ্ঞপ্তি ও মাইকিং করে জানানো হয়।

এসময় অভিযানে নেতৃত্ব দেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসচিব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশফাকুল হক চৌধুরী, সড়ক ও জনপথ বিভাগ সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী ও ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আনোয়ার পারভেজ। উচ্ছেদ অভিযানে সাতক্ষীরা র‍্যাব-৬ এর (সিপিজি-১) ডিএডি হাবিবুর রহমান, শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ূন কবির মোল্লা, সেনাবাহিনী, র‍্যাব, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: কামরাঙ্গীরচরে ছোট্ট কন্যাশিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

উচ্ছেদকালে সড়কের দুই পাশে নির্মিত দোকানপাট, টিনের ঘর, অস্থায়ী কাঠামো ও অন্যান্য স্থাপনা অপসারণ করা হয়। এ সময় স্থানীয় জনগণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও অনেকেই প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানান। তারা বলেন, অবৈধ দখলের কারণে সড়কটি সরু হয়ে গিয়েছিলো এবং যানবাহন চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগ হচ্ছিল।

এসময় বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয় সকল অবৈধ স্থাপনা। এতে বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যূত হয়ে পড়ে সড়কের পাশে বসবাস করা শতাধিক পরিবার। চোখের সামনে বাড়িঘর গুড়িয়ে যেতে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।

স্থানীয় সখিনা খাতুন তার বসতঘর হারিয়ে বলেন, আমরা দীর্ঘ ৫০ বছর রাস্তার পাশে বসবাস করে আসছি। কেউ আমাদের উঠিয়ে দেয়নি। আমাদের বসবাসের কোন জায়গা নেই। এখন আমরা কোথায় যাব? পরিবারের শিশু-বৃদ্ধেদের নিয়ে কোথায় থাকবো?

এদিকে, উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের দাবিতে তাৎক্ষণিক প্লাকার্ড হাতে নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় কিছু তরুণ। অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া হাফিজুর রহমান ও জান্নাতুল নাঈম বলেন, উচ্ছেদ হওয়া ভূমিহীনদের মানবিক দৃষ্টিতে অন্যত্র পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি গুচ্ছ গ্রামে তাদের বসবাসের সুযোগ করে দিতে হবে। আমরা অবশ্যই উন্নয়ন চাই। কিন্তু এগুলো পরিবার যাবে কোথায়? তাদের বাসস্থান নিশ্চিত করার দায়িত্ব অবশ্যই রাষ্ট্রের।

এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনী খাতুন বলেন, যদি কোন ভূমিহীন সরকারি খাস জায়গা বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করে, আমরা সেটি বিবেচনা করবো। তবে তাৎক্ষণিক তাদেরকে পুনর্বাসনের সুযোগ নেই।