অবরোধ সহ সারাদিন গোপালগঞ্জের পরিস্থিতি
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঘোষিত শাটডাউন কর্মসূচীতে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারাদিন পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল। সহিংসতা এড়াতে সকাল থেকেই জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব টহল দেয়। জেলা কারাগারেও বাড়ানো হয় নিরাপত্তা।
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্বাভাবিকভাবেই খোলা থাকলেও গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত সব পরীক্ষা বন্ধ ছিল। দোকানপাটও খোলা থাকলেও অন্য দিনের তুলনায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম দেখা গেছে।
আওয়ামী লীগ ঘোষিত শাটডাউন কর্মসূচি বানচাল করতে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি তারাও সারাদিন মাঠে ছিলেন।
গোপালগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার কোনও বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। শহরজুড়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও থ্রি-হুইলার চলাচল করলেও যাত্রী ছিল না বললেই চলে।
আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে পার্কিং করা যাত্রীবাহী বাসে রহস্যজনক আগুন
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাস মালিক সমিতির একাধিক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়বে কিনা সন্ধ্যার পরে সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
সোমবার সকালে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার তিলছড়া বাজার এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
একইভাবে সকালে সদর উপজেলার ডুমদিয়া এলাকাতেও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে কয়েকজন মহাসড়কে যানবাহন আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে সেখানেও তারা বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি।
বিকালে রায় ঘোষণার পরে একই স্থানে আবারও আগুন জ্বেলে ও গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করা হয়। ঘটনাগুলোর ভিডিও পরে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এছাড়াও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় রায় ঘোষণার পরপরই টুঙ্গিপাড়া ছাত্রলীগ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুটি অভিযোগে এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই অপরাধের মামলায় রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সর্বোচ্চ সাজা কমিয়ে ৫ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত রায় পড়া শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়।





