কাপাসিয়ায় আলোচিত মাদক কারবারি জুয়েলের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ, গ্রেফতার এক

Sadek Ali
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ন, ২৫ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৪:৩৭ অপরাহ্ন, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বহুল আলোচিত শীর্ষ স্থানীয় মাদক কারবারি জুয়েলের (২৫) আস্তানাটি ২৫ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে থানা পুলিশ। প্রতিবাদী যুবক রুহুল আমিনের উপর হামলার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রবের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে আস্তানাটি ভেঙে দেওয়া হয়। এসময় মাদক কারবারি হুমায়ূন কবির (২৮) কে ২০ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে। সে খিরাটী গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র। এতে এলাকাবাসী স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

জানা যায়, মাদক কারবারি জুয়েল বাহিনীর দৌরাত্ম্যে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। সোমবার উপজেলার সিঙ্গুয়া এলাকায় সশস্ত্র মাদক কারবারি চক্রের বিরুদ্ধে ভিডিপি সদস্য ও নৈশপ্রহরী রুহুল আমিন প্রতিবাদ করলে তারা হামলা ও নির্যাতনের শিকার হন।

আরও পড়ুন: কৃষক দল নেতা খন্দকার নাসিরের অপকর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারেক রহমানের কাছে মহিলা দলনেত্রীর আবেদন

স্বজনরা জানান, উপজেলার ঘাগটিয়া ইউনিয়নের সিঙ্গুয়া পূর্বপাড়া (মিয়ার মার বাড়ি) ফজলু মিয়ার পুত্র জুয়েল দীর্ঘদিন যাবত এলাকার উঠতি বয়সী ছেলেদের মাঝে মাদকদ্রব্য সরবরাহ করে আসছে। এতে অসংখ্য ছেলেরা মাদকাসক্ত হয়ে বিপথগামী হয়ে পড়ছে। ২৪ নভেম্বর সোমবার সকাল ১০টার দিকে রুহুল আমিন (২৫) নামে এক প্রতিবাদী যুবক মাদক কারবারি জুয়েলের এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করলে তার উপর সে হামলা চালায়। এলোপাথাড়ি ছুরির আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বর্তমানে রুহুল আমিন মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি সিঙ্গুয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী এবং ওই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের পুত্র। ইতিপূর্বেও তিনি একাধিকবার প্রতিবাদ করে জুয়েলের হামলার শিকার হয়েছেন।

এলাকাবাসী জানান, সিঙ্গুয়া পূর্বপাড়ার মৃত সামসুল হকের স্ত্রী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বেবী বেগমের (৫৫) বাড়িতে মাদক কারবারি জুয়েল জোরপূর্বক প্রতিনিয়ত আড্ডা বসায়। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। প্রভাবশালী একটি মহলের ছত্রছায়ায় জুয়েলের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়ছে। এতে এলাকাবাসী আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ইতিপূর্বে একাধিকবার মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রতিবাদ করে অনেকেই হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর আগে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অগ্রণী যুব সংঘের’ সদস্যরা থানায় একাধিক লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাতে কোনো প্রতিকার পাননি, বরং উল্টো মাদক কারবারিদের ভয়ভীতি, হুমকি ও হামলার শিকার হয়েছেন। বারবার থানা পুলিশকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে এলাকাবাসী হতাশ হয়েছেন। মাদক কারবারিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে এলাকাবাসীর দাবি।

আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে পার্কিং করা যাত্রীবাহী বাসে রহস্যজনক আগুন

এদিকে মাদক কারবারিদের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত নৈশপ্রহরী রুহুল আমিনের ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুই দিন যাবত ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নানের নির্দেশে বিএনপির সিনিয়র নেতা হাবিবুর রহমান শাহীন, উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব মামুনুর রশিদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ মু. সালাউদ্দিন আইয়ুবী হাসপাতালে তাকে দেখতে ছুটে যান। তারা আহত রুহুল আমিনের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং যেকোনো ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রব জানান, মাদক কারবারিদের হামলার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকাবাসীর তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ২০ পিস ইয়াবাসহ হুমায়ূন কবির নামে একজনকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের আস্তানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখিত মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।