শীতের আগমনী বার্তায় ব্যস্ত লেপ-তোশক কারখানা
উত্তরবঙ্গের সীমান্তঘেঁষা জেলা লালমনিরহাটে জোরদার হচ্ছে শীতের প্রভাব। ভোরের ঘন কুয়াশা, রাতভর শিশির আর হিমেল হাওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে শীতের তীব্রতা। আর এই শীতের আগমনী বার্তায় কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার লেপ–তোশক কারিগররা।
সরেজমিনে জেলা শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে—ক্রেতারা পছন্দমতো তুলা ও কাপড় বেছে নিচ্ছেন, আর দোকানিরা অর্ডার নিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। লালমনিরহাট শহরের ১৪ থেকে ১৫টি লেপ–তোশক কারখানায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ চলছে টানা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে লেপ–তোশক তৈরির উপকরণেও। বর্তমানে লেপ তৈরির কাপড় গজপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, তোশকের কাপড় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং জাজিম ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গার্মেন্টস তুলা কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা, ফোম তুলা ২০০ টাকা এবং শিমুল তুলা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে। জুটের দাম কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। তুলার দাম এবার প্রায় সব ক্ষেত্রেই ২০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
তারা আরও বলেন, বর্তমানে রেডিমেড লেপ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, তোশক ৮০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায়, জাজিম ২ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় এবং বালিশ ১০০ থেকে ২০০ টাকায়।
আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে পার্কিং করা যাত্রীবাহী বাসে রহস্যজনক আগুন
ভেলাবাড়ী বাজারের মেসার্স সীফাত ক্লথ স্টোর দুই কারিগর মো. শফিকুল ইসলাম (৪০) ও শরিফুল ইসলাম (৩৫) জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কাজের চাপও বেড়ে গেছে। “এই সময়টাতেই আমাদের মূল আয়। তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টানা কাজ করতে হয়,” বলেন তারা।
শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্রই এখন লেপ–তোশক তৈরির ব্যস্ততা চোখে পড়ে। কেউ পুরোনো লেপের তুলা খুলে নতুন করে ভরছেন, কেউ আবার নতুন লেপের জন্য তুলা প্রস্তুত করছেন। আরেক দল ব্যস্ত সেলাই ও বাহারি কাপড়ে আকর্ষণীয় নকশা তৈরিতে।
কারিগর ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীত যত বাড়বে, লেপ–তোশকের চাহিদাও তত বাড়বে। অনেকেই পুরোনো লেপ–তোশক মেরামত করিয়ে নিচ্ছেন নতুন করে। সব মিলিয়ে শীতের আগমনী প্রস্তুতিতে লালমনিরহাটজুড়ে চলছে কর্মচাঞ্চল্য—আর সেই প্রস্তুতির অন্যতম বড় অংশ দখল করে আছে লেপ–তোশক তৈরির এই ব্যস্ততা।





