তারেক রহমানের গণসংবর্ধনায় যোগ দিতে গিয়ে পথে কৃষক দল নেতার মৃত্যু
দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় নির্বাসিত জীবন শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে সারাদেশে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে অংশ নিতে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় বিএনপির আয়োজিত গণসংবর্ধনায় যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় ছুটে আসছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে নড়াইল জেলা থেকেও হাজারো নেতাকর্মী বাসযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। তবে পথিমধ্যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় চলন্ত বাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের লোহাগড়া উপজেলা আহ্বায়ক মুন্সী খায়রুজ্জামান আলম। দ্রুত তাকে ভাঙ্গা সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান, তিনি স্ট্রোকজনিত কারণে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: যাত্রী বেশে সিএনজিতে গাঁজা বহন, আটক ৪
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মুন্সী খায়রুজ্জামান আলম নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত চেরাগ মুন্সির ছেলে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিএনপি
আরও পড়ুন: নতুন বছরের প্রথম দিন পর্দা উঠছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার, উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা
লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম জানান, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বুধবার রাতে লোহাগড়া সিএন্ডবি চৌরাস্তা থেকে নেতাকর্মীরা বাসে করে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় পৌঁছানোর পর মুন্সী খায়রুজ্জামান আলম হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, কয়েকজন নেতাকর্মী মরদেহটি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন এবং বাকি নেতাকর্মীরা ঢাকায় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
নড়াইল থেকে ঢাকামুখী প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী
নড়াইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম জানান, তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে জেলা জুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া—এই তিন উপজেলা থেকে অন্তত ২০ হাজার নেতাকর্মী বাস, মাইক্রোবাস, ট্রেন ও ব্যক্তিগত যানবাহনে ঢাকায় রওনা হয়েছেন।
তিনি বলেন, এই আনন্দঘন যাত্রাপথেই আমরা একজন ত্যাগী নেতাকে হারালাম। জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
৩০ ফিট এলাকায় উৎসবের আমেজ
ঢাকায় পৌঁছেই তারেক রহমান পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত সংক্ষিপ্ত গণসংবর্ধনায় যোগ দেবেন। বুধবার রাত থেকেই কুড়িল থেকে শুরু করে পুরো মঞ্চ এলাকা পর্যন্ত নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। তিল ধারণের জায়গা নেই। কোথাও স্লোগান, কোথাও মিছিল, আবার কোথাও দলীয় গান—সব মিলিয়ে পুরো এলাকা পরিণত হয়েছে এক বিশাল উৎসব প্রাঙ্গণে।
নেতাকর্মীদের মুখে মুখে একটিই স্লোগান—
“লিডার আসছে”।
পথে পথে খাবার ও পানি বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা। স্পিকারবাহী ট্রাক থেকে বাজছে দলীয় ও দেশাত্মবোধক গান।
কঠোর নিরাপত্তা, ৫০ লাখ মানুষের সমাগমের প্রত্যাশা
এই বিশাল জনসমাগম ঘিরে পূর্বাচল ও আশপাশের এলাকা কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও অভ্যর্থনা কমিটির সদস্য সচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন, তারেক রহমানের সংবর্ধনায় প্রায় ৫০ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে বলে তারা আশাবাদী।





