চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা নেমেছে ৯.৭ ডিগ্রিতে

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায় শীতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে শুরু করায় কনকনে ঠান্ডা, হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি শীত মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

আরও পড়ুন: তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উদযাপনে এক মণ মিষ্টি বিতরণ ছাত্রদল নেতার

সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ডের সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল প্রায় ৯৫ শতাংশ। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার থেকেই চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে।

জনজীবনে স্থবিরতা

আরও পড়ুন: লঞ্চ–বাল্কহেড সংঘর্ষ, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন সহস্রাধিক যাত্রী

হাড়কাঁপানো শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে দিনমজুর, ভ্যানচালক ও শ্রমজীবী মানুষদের ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।

শহর ও গ্রাম—উভয় এলাকাতেই শীতের দাপটে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল বাতাসের কারণে শীতের প্রকোপ কমছে না।

বাড়ছে শীতজনিত রোগ

শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগব্যাধি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বিশেষ করে রোটাভাইরাসজনিত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ জন রোগী শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

কর্মজীবীদের ভোগান্তি

শহরের হোটেল ব্যবসায়ী আব্বাস আলী বলেন, “ফজরের আজানের পরপরই হোটেল খুলতে হয়। ভোরে পানিতে হাত দিলেই মনে হয় হাত অবশ হয়ে যাচ্ছে। পেটের দায়ে তবুও কাজ করতে হচ্ছে।”

চা-দোকানি আকাশ হোসেন জানান, প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে মানুষের আনাগোনা কমে যাওয়ায় এখন তিনি বাধ্য হয়ে দেরিতে দোকান খুলছেন।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, “আজ সকালে রেকর্ড করা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।”

আবহাওয়াবিদদের মতে, আগামী কয়েকদিন শীতের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে, ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।