ছয় স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ঢাকা আসছেন তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শুরু করে তিনশ ফিট রোড (৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে), সংবর্ধনা এলাকা, এভারকেয়ার হাসপাতাল হয়ে গুলশানের ফিরোজা ভবন—পুরো যাত্রাপথ থাকবে ছয় স্তরের নিরাপত্তা বলয়ে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরের ‘ইয়েলো জোন’ থেকেই অন্তত ১২ ঘণ্টা ছায়ার মতো তারেক রহমানকে ঘিরে রাখবে বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। সর্বশেষ ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সদর দপ্তরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ সমন্বয় সভায় নিরাপত্তার প্রতিটি দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানালেন তারেক রহমান
ডিবির নেতৃত্বে সাদা পোশাকে শতাধিক সদস্য
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শফিকুল ইসলাম জানান, তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ডিবির অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ সাদা পোশাকধারী সদস্য বিমানবন্দরের ইয়েলো জোন থেকে শুরু করে কনভয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়েসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতেও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার থাকবে।
আরও পড়ুন: হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন তারেক রহমান
সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়
একাধিক সূত্র জানায়, চেয়ারপারসন্স সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ), সেনাবাহিনীর ৪৬ ব্রিগেড, মিরপুর সেনানিবাসের এয়ার ডিফেন্স আর্টিলারি ইউনিট, র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইং, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন আনসারসহ সব গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম বিমানবন্দর, এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং গুলশানের ফিরোজা ভবন ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ছাদেও অবস্থান নিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
স্নাইপার ঝুঁকিতে ৭ বার বদলানো হলো মঞ্চ
তারেক রহমানকে ঘিরে আয়োজিত সমাবেশের মঞ্চের অবস্থান নিরাপত্তাজনিত কারণে সাতবার পরিবর্তন করা হয়েছে। মঞ্চের চারপাশে বুলেটপ্রুফ কাঁচ বসানো হয়েছে। সড়ক থেকে মোট ১৫ ফুট উঁচুতে ডায়াস তৈরি করা হয়েছে, যাতে যেকোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলা করা যায়। সম্ভাব্য স্নাইপার অ্যাটাক ও গ্রেনেড নিক্ষেপের আশঙ্কা বিবেচনায় নিয়ে দর্শক সারির দূরত্বও নির্ধারণ করা হয়েছে।
ড্রোন উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ২৪ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এভারকেয়ার হাসপাতাল ও সংলগ্ন এলাকা এবং তারেক রহমানের যাতায়াতের পুরো পথে কোনো ধরনের ড্রোন উড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অনুমোদনহীন ড্রোন উড্ডয়নের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপির দলীয় প্রস্তুতিও তুঙ্গে
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলীয়ভাবে প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবেন। বিমানবন্দরের রেড জোনে শুধুমাত্র দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের প্রবেশের অনুমতি থাকবে এবং অভ্যর্থনাস্থলের জন্য আলাদা নিরাপত্তা পাশ দেওয়া হবে।
এদিকে নিরাপত্তা ও ভিআইপি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে লন্ডন-ঢাকা রুটের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট থেকে দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।





