রানীক্ষেত ভাইরাস প্রতিরোধ ভ্যাকসিন উৎপাদনে সফলতা নিয়ে রাবিতে সেমিনার

Sanchoy Biswas
প্রতিনিধি, রাবি
প্রকাশিত: ৯:২৬ অপরাহ্ন, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৪:১৮ পূর্বাহ্ন, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের উদ্যোগে রানীক্ষেত ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উৎপাদন করে ‘রানীক্ষেত রোগের টেকসই নিয়ন্ত্রণের ভিত্তিতে বাংলাদেশে গ্রামীণ মুরগির উৎপাদন উন্নতকরণের জন্য অংশগ্রহণমূলক কর্ম গবেষণা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদ গ্যালারিতে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মইজুর রহমানের সভাপতিত্বে মূল বক্তব্যে এই গবেষণা প্রকল্পের পরিচালক, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শশী আহমেদ, গবেষণা প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন: ডাকসু নারী প্রার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি, প্রতিবাদের ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শশী আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের আই-টু এনডি ভ্যাকসিন ল্যাবরেটরিতে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রকল্পটির সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় উৎপাদিত ভ্যাকসিনটির পর্যাপ্ত কার্যকারিতা পাওয়া গেছে।

সেমিনারে বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের কৃষি ও খামার খাত দীর্ঘদিন ধরে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হলো রানীক্ষেত ভাইরাস, যা একবার সংক্রমিত হলে একটি খামারের সব মুরগি ধ্বংস করে দিতে পারে। ফলে হাজার হাজার খামারি মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হন। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় গবেষক ও বিজ্ঞানীরা নিরলস পরিশ্রম করে একটি নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছেন। এই ভ্যাকসিন সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে শুধু খামার খাতই রক্ষা পাবে না, বরং দেশের অর্থনীতি উন্নত হবে।

আরও পড়ুন: স্থগিত হলো ডাকসু, নেপথ্যে হাইকোর্টের নির্দেশনা

ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কে. এম. মোজাফফর হোসেন বলেন, "রানীক্ষেত ভাইরাস আসলেই খামারিদের জন্য একটি ভয়াবহ সমস্যা। আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণ ও টেকসই সমাধানের জন্য একটি নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছি। এর আগে যে ভ্যাকসিনটি আবিষ্কার করা হয়েছিল, সেটি কাজ করছে না—এমনটি বলা যাবে না। আসলে সেই ভ্যাকসিনটি এখানে উৎপাদনের পর গ্রামাঞ্চলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে তার সঠিক ব্যবহার অনেক সময় ব্যাহত হয়, এজন্য মাঝে মাঝে কার্যকারিতা কমে যায়।"

এ সময় তিনি আরও বলেন, "বর্তমানে যে ভ্যাকসিন আমরা তৈরি করেছি এটি যথাযথভাবে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। যদি সঠিকভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়, তাহলে এই সমস্যা আর থাকবে না এবং মানও বজায় থাকবে।"

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘আজকের এই আলোচনা সত্যিই চমৎকার ও জীবনধারণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রানীক্ষেত ভাইরাস একটি মারাত্মক রোগ, যা একটি খামারের সব প্রাণী ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশের অনেক মানুষ খামার উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু দিন দিন এই খাত অবনতির দিকে যাচ্ছে। যদি এই ভ্যাকসিন সফলভাবে আবিষ্কার ও প্রয়োগ করা যায়, তবে এটি আমাদের বাঁচার পথ সুগম করবে এবং খামার খাতকে রক্ষা করবে। গবেষক ও প্রকল্প দলের প্রতি আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এবং প্রকল্প সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’