জুলাই পরবর্তী ছাত্ররাজনীতির মডেল ছাত্রশিবির : সাদিক কায়েম

Sanchoy Biswas
আরাফাত চৌধুরী, জবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৮:০৬ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৯:৫৩ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

'ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির মডেল কেমন হবে? তা জুলাই পরবর্তী গত এক বছরে ইসলামী ছাত্রশিবির করে দেখিয়েছে' বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম। তিনি বলেন, এ জন্যই শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচিত করেছেন।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির কর্তৃক আয়োজিত শহিদ ইকরামুল হক সাজিদ স্মৃতি আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে স্নাতক ভর্তি আবেদন শুরু ২৯ অক্টোবর থেকে

সাদিক কায়েম বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে ছাত্রশিবির ছিল সবচেয়ে মজলুম সংগঠন। শিবির পরিচয়কে ক্রিমিনালাইজড করা হয়েছিল, হত্যাযোগ্য করা হয়েছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই বিশ্বজিৎকে আমরা শিবির সন্দেহে হত্যা করতে দেখেছি। আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের পর শিবির সন্দেহে কাউকে মারার বৈধতাকে প্রশ্ন করা হয়। তবে তখনও মারার পর কেউ শিবির প্রমাণিত হলে সবাই এ বিষয়ে নিশ্চুপ থাকতো। আমাদের ছয়জন ভাইয়ের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।

ডাকসু ভিপি বলেন, ছাত্রশিবির সৃজনশীলতাকে সবসময় প্রমোট করে। সুষ্ঠু রাজনীতির যে চিন্তা, তার সব কিছু আমরা সৃজনশীলতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চাই। সুন্দর ক্যাম্পাস বিনির্মাণে বিতর্কচর্চা গুরুত্বপূর্ণ। বিতর্কের মাধ্যমে আমরা দেশকে গড়ে তুলতে পারি।

আরও পড়ুন: শিক্ষা ভবনের সামনে প্রস্তুত জলকামান ও সাঁজোয়া যান

'সাংবাদিকতার বড় অংশ, মানবাধিকারকর্মী, ব্যবসায়ী, সিভিল সোসাইটি সমাজের মুক্তির বদলে ধ্বংস করেছিল। তারা ক্যাম্পাসের নিপীড়নকে বৈধতা দিয়েছিল। মুখে মুক্তির কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ওপর নির্যাতন চালানোর বৈধতা দেওয়া হয়েছিল। ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে শাহবাগ ও এ সমাজ দায়ী ছিল। দুই হাজার শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পেয়েছি।'

তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বের সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একেকটি জ্ঞান বিজ্ঞানের হাব। সেখানে গবেষণা খাতে অনেক অর্থ বরাদ্দ থাকে। তবে আমাদের দেশে গবেষণা খাতে বরাদ্দ অনেক কম, যা মেধার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয় না। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার ভিত্তিতে এসব অর্থের বরাদ্দ দেওয়া হয়। আমাদের এসব রাজনীতির নামে নোংরামি বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রাজনীতির একেকটি হাবে পরিণত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. বিলাল হোসাইন। তিনি বলেন, 'বিতর্ক মানুষকে ভাবতে শেখায়। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি—যারা বিতর্ক করে, তারা পরীক্ষায় ভালো ফল করে এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসি মূলত ভালো মানুষ হওয়ার জন্য। যদি বিশ্ববিদ্যালয় তা করতে ব্যর্থ হয়, তবে জাতীয় পর্যায়ে তার কোনো ইতিবাচক অবদান থাকবে না। আমাদের হতে হবে জ্ঞাননির্ভর।'

জবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি মডারেটর অধ্যাপক নুরুল্লাহ, শহীদ সাজিদের বোন ফারজানা হকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ছিলেন শাখা ছাত্রশিবিরের।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র শহীদ একরামুল হক সাজিদ স্মৃতি আন্তঃবিভাগ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মোট ২৪টি দল অংশ নেয়। চূড়ান্ত পর্বে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগকে হারিয়ে ইতিহাস বিভাগ বিজয়ী হয়।