ক্ষমতা বাড়ল ইসির, গেজেট প্রকাশ

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩:২৯ অপরাহ্ন, ০৬ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৩:২৯ অপরাহ্ন, ০৬ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ভোটে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অনিয়মকারী নির্বাচন কর্মকর্তাদের শাস্তি বাড়িয়ে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের বিষয়ে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রকাশ করা হয়েছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ দুটি অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ইসির নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, অফিস কর্মচারী বরখাস্ত

নির্বাচন কর্মকর্তাদের শাস্তি ও নতুন বিধান

‘নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্বে নিয়োজিত সবাইকে নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মাঠ পর্যায়ের তথ্য পুনঃতদন্তে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন

গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ:

অসদাচরণ:

নির্বাচন কর্মকর্তারা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কমিশন বা রিটার্নিং অফিসারের আদেশ না মানেন, কোনো আইন লঙ্ঘন করেন বা দায়িত্বে অবহেলা করেন, তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে।

শাস্তির ধরন:

অসদাচরণের দায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত, বাধ্যতামূলক অবসর, পদাবনতি বা পদোন্নতি ও বেতন স্থগিত (সর্বোচ্চ ২ বছর) করা যাবে।

কমিশনের ক্ষমতা:

কমিশন বা রিটার্নিং অফিসার প্রয়োজন মনে করলে ২ মাস পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিতে পারবেন।

নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের বাধ্যবাধকতা:

কমিশনের প্রস্তাব পাওয়ার এক মাসের মধ্যে শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং কমিশনকে জানাতে হবে।

দণ্ডের বিধান:

অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কমিশনের আদেশ অমান্য করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

ইসির প্রাধান্য:

সরকার ও নির্বাচন কমিশনের মধ্যে কোনো বিধান নিয়ে ভিন্নমত হলে ইসির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

নতুন এই সংশোধনের ফলে ভোটে অনিয়ম বা দায়িত্বে গাফিলতিতে কঠোর শাস্তির পথ উন্মুক্ত হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইসি সচিবালয়ে নতুন সার্ভিস চালু

একই সঙ্গে ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর মাধ্যমে “নির্বাচন কমিশন সার্ভিস” নামে একটি নতুন ক্যাডারধর্মী সার্ভিস চালু করা হয়েছে। এর ফলে ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজস্ব সার্ভিস কাঠামোর আওতায় পদোন্নতির সুযোগ পাবেন, এমনকি সচিব পদেও উন্নীত হওয়ার সুযোগ থাকবে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ২০০৯-এর সংশোধনীতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য ‘নির্বাচন কমিশন সার্ভিস’ নামে একটি সার্ভিস থাকিবে।

ইসি কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই দুটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে কমিশনের স্বাধীনতা, ক্ষমতা ও প্রশাসনিক সক্ষমতা আরও শক্তিশালী হলো।